বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢেকে থাকলেও দুপুর থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি।
নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড় হামুনে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। যেটি বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বিরামহীন বৃষ্টি আর ঝড়ের সময় এগিয়ে আসায় উপকূলবাসীর উদ্বেগ বেড়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার আশাশুনি, শ্যামনগর ও দেবহাটা উপজেলার কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, গলঘেষিয়া ও বেতনা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে আছেন উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।
এ ছাড়া সাতক্ষীরা উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৩৫টি পয়েন্টের প্রায় ২৯৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকাতে ওই এলাকার জনপদগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার বাসিন্দা রানা হোসেন জানান, উপকূলীয় এলাকা নদীবেষ্টিত। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। সরকার থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না। যে কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আতঙ্কে থাকেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, একই উপজেলার ভেটখালি, হরিনগর, মুন্সিগঞ্জসহ পাশ্ববর্তী অনেক এলকার অধিকাংশ বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। এছাড়া আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনি সদরসহ বিভিন্ন স্থানে বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে এসব এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এক নম্বর সতর্কতা সংকেত অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী সতর্ক সংকেত জানিয়ে দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-১) নির্বাহী প্রকৌশলী সালাউদ্দীন বলেন, পাউবো-১ এর আওতাধীন বেড়িবাঁধ গুলোর ভিতরে প্রায় চার কিলোমিটার ভেরিবাধঁ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যে কোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-২) নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, পাউবো-২ এর আওতাধীন বেড়িবাঁধগুলোর ভিতরে ২৯৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আমরা পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ মজুদ করে রেখেছি। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
মন্তব্য করুন