শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
স্বপন চন্দ্র দাস, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চিকিৎসকের নৌকা ডোবাতে মরিয়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ

নৌকার প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুইট। ছবি : সংগৃহীত
নৌকার প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুইট। ছবি : সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া চিকিৎসক ডা. আব্দুল আজিজের নৌকা ঠেকাতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ। চলনবিল-অধ্যুষিত মৎস্য ও শষ্যভান্ডার খ্যাত রায়গঞ্জ এবং তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইটের ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন অধিকাংশ স্থানীয় নেতাকর্মী। বর্তমান এমপি ডা. আজিজের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ এনে নৌকা ছেড়ে ঈগলে আস্থা রাখছেন তারা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার সমর্থকরা দাবি করেন, অভিমানে কিছু নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে থাকলেও এখানে নৌকারই বিজয় হবে।

সরেজমিনে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ খন্দকার নিষ্ক্রিয় থাকলেও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার কর্মকার নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। সহসভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন, সহসভাপতি ইউনুস তাড়াশী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক আলহাজ আলী, সদস্য আব্দুল গফুর, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বকুল, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মীর শহিদুর রহমান ও বাবলু শেখ, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম বুলবুল, তালম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্বাসুজ্জামান, দেশীগ্রাম ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাকসহসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা নৌকা ডোবাতে মাঠে নেমেছেন। এমনকি নৌকা প্রার্থী ডা. আজিজের নিজ ইউনিয়ন সগুনার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামসহ অনেক নেতাকর্মীই সরাসরি তার বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

তবে নৌকার পক্ষে রয়েছেন উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ বেশ কয়েকটি ইউপির চেয়ারম্যান।

তাড়াশ সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল সেখ বলেন, ডা. আব্দুল আজিজ এমপি একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। তিনি ত্যাগী নেতাকর্মীদের চেনেন না। তারা তিন ভাই এবং ৬৪ জন ভাগ্নে মিলে গত পাঁচ বছর লুটপাট করেছেন। সেই জবাব দিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুইটের পক্ষে কাজ করছি।

তাড়াশ কৃষক আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর শহিদুল ইসলাম বলেন, এমপি আব্দুল আজিজ কোনো জনকল্যাণমূলক কাজ করেননি। ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করেছেন। ভাইদের দিয়ে টিআর-কাবিখার নিয়ন্ত্রণ, স্ত্রী-শ্যালক ও ভাইদের ৩-৪টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। নৌকার মাঝি ভালো না হওয়ায় ঈগল পাখির কাজ করছি।

দেশীগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান জানেন্দ্রনাথ বসাক বলেন, এমপি ডা. আজিজ শুধু তেলবাজ পছন্দ করেন। জনপ্রিয়দের হিংসা করেন। বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতেন। আজ নিজেই স্বতন্ত্রের কবলে পড়েছেন। আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছি।

তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার কর্মকার বলেন, রাগ-অভিমানের কারণে কিছু নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তারপরও নৌকা জেতানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

অপরদিকে রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নৌকার কাজ করলেও দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই ঈগলের পক্ষে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল হালিম খান দুলাল বলেন, এমপির স্বেচ্ছাচারিতার জবাব দিতে প্রার্থী হয়েছিলাম, মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি।

তবে রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয় বলেন, গত পাঁচ বছরে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দলও আগের চেয়ে এখন অনেক মজবুত। আশা করছি আবারও নৌকার বিজয় হবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট বলেন, এটি কৃষিপ্রধান একটি অঞ্চল। এখানকার কৃষক, দিনমজুর ও দলের বঞ্চিত নেতাকর্মীই আমরা প্রাণ। চলনবিল-অধ্যুষিত এ অঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রমুখী করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। জনগণের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ইনশাল্লাহ বিজয়ী হয়ে ঘরে ফিরব। এসব বিষয়ে নৌকার প্রার্থী ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, আমি পেশায় চিকিৎসক, মানুষের সেবা করা আমার নেশা। পাঁচ বছরে অনেক উন্নয়ন করেছি। মানুষের পাশে থেকেছি। আশা করছি, জনগণ আবারও আমাকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। দলের কিছু মানুষ ভুল বুঝে বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে থাকতে পারে কিন্তু ভোট তারা নৌকাতেই দেবে।

এ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৪৩টি। আসনটিতে নৌকা ও ঈগল ছাড়াও তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির জাকির হোসেন ( লাঙল), বিএনএমের গোলাম মোস্তফা (নোঙর) ও স্বতন্ত্র নুরুল ইসলাম (ট্রাক)।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ক্যাম্প ন্যু প্রস্তুত না হলে লা লিগার কাছে যে অনুরোধ করতে চায় বার্সা

‘নির্বাচনে আমলাদেরকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে’

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

১০

সুদ দিতে না পারায় বসতঘরে তালা, বারান্দায় রিকশাচালকের পরিবার

১১

দেশ বাঁচাতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে : চরমোনাই পীর

১২

এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি-ভাঙচুর, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৩

জেলের জালে বড় ইলিশ, ৯ হাজারে বিক্রি 

১৪

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৫

আগামী সংসদ প্রথম তিন মাস ‘সংবিধান সংস্কার সভা’ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব

১৬

ধরলার তীব্র ভাঙন, টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৭

নেতা ও ভোটারের জবাবদিহিই হবে শ্রেষ্ঠ সংস্কার : মঈন খান

১৮

পাপের ফল ওদের ভোগ করতেই হবে : রাশেদ খান

১৯

ক্ষমা চাইলেন স্বাধীন খসরু 

২০
X