খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বোরো মৌসুমে আদর্শ বীজতলা তৈরিতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা বৈরী আবহাওয়ায় টিকে থাকতে পারে। একই সঙ্গে সুস্থ চারা উৎপাদন ও কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকি কমাতেও সহায়তা করে।
আদর্শ বীজতলায় চারা উৎপাদন খরচ সাশ্রয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি হয়। তাই মাটিরাঙ্গা উপজেলার প্রায় সব স্থানে এ বীজতলা চোখে পড়ছে। এ বীজতলা তৈরিতে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার কৃষি অফিস।
সনাতনী বীজতলার তুলনায় আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত চারার স্বাস্থ্য ভালো হয়। বীজতলা থেকে চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি ধরে না, ফলে চারাগুলো কোনো আঘাত পায় না। জমিতে রোপনের পর শতভাগ চারা জীবিত থাকে এবং অল্প সময়ে বেড়ে উঠে। চারা সবল থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়। স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজ কম লাগে। ফলে খরচও কম হয়।
আদর্শ বীজতলা পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য প্রথমে শুকনো জমি ভালোভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। জমি প্রস্তুত হলে দুই হাত প্রস্থ এবং ইচ্ছেমতো দৈর্ঘ্য নিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। মানসম্মত বীজ সংগ্রহপূর্বক পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সেগুলো বীজতলায় সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। বীজ ছিটানোর পরে আলতো করে মাটি নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। ২৫-৩০ দিনের মধ্যে চারাগুলো রোপণের উপযুক্ত হয়।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ২ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হতে পারে ২২ শ হেক্টরের বেশি। এর বিপরীতে ১৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জিত হতে পারে ১৬০ হেক্টর জমি।
উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের কৃষক আমান উল্ল্যাহ জানান, স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজ, শ্রম, সার ও সেচ খরচ কম লাগে এবং চারার মান ভালো পাওয়া যায়। তাই আমি এ পদ্ধতি অনুসরণ করি।
মাটিরাঙ্গায় চড়পাড়ার কৃষক মো. জমির আলী বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে যে জায়গায় ৫০ কেজি বীজ প্রয়োজন হতো সেখানে আদর্শ পদ্ধতিতে ৩৫ কেজি বীজ লাগে। ফলে বীজতলা তৈরিতে খরচ কম হয়।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী বলেন, আদর্শ বীজতলার বিষয়ে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। এ বীজতলা তৈরির ফলে আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, সেচ দেওয়া, বালাই দমন সহজ হয় একইভাবে সুস্থ-সবল চারা উৎপাদন হয়। স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজ কম লাগে। ফলে খরচও কম হয়।
মন্তব্য করুন