মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চৌদ্দ বছর বয়সের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে করা মামলার একমাত্র আসামি ছাত্রলীগ নেতা শাকিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (৯ জুলাই) ভোরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রাম থেকে পুলিশ শাকিলকে গ্রেপ্তার করে। পরে দুপুরে শাকিলকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, শাকিল (২১) মুন্সিগঞ্জ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খালইস্ট এলাকার বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
শাকিলের পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, তার ইউরোপ যাওয়ার কথা ছিল। তবে এ ধরনের ঘটনায় সেই পথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। সেই সুবাদে প্রায়ই মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া-আসা এবং মাঝেমধ্যে হাসপাতালে থাকত সে। ৪ জুলাই মঙ্গলবার রাতে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে ছিল ওই কিশোরী। ঘটনার রাতে ৪-৫ জনের সহযোগীকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে যান স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে লোকজন কমে গেলে ওই কিশোরীকে ডেকে প্রেমের প্রস্তাব দেন শাকিল। এতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে টেনে হাসপাতালে ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি।
এ সময় বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান তারা। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন ওই কিশোরী। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও সমঝোতার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত শাকিল। পরে ৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা।
এদিকে শুক্রবার ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। হাসপাতালের ভেতরে কীভাবে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটল, তা জানতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো তদন্ত শেষ হয়নি বলে জানা গেছে। মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবু হেনা মোস্তফা জামাল হচ্ছেন তদন্তের প্রধান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় শাকিলকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, এর আগে একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হলেও শাকিল পালিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশের একাধিক টিম তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক স্থানীয় সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
মন্তব্য করুন