প্রবাসী ছেলে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় মায়ের স্বপ্ন ছিল কোনো একদিন তার ছেলে তাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন। অবশেষে হেলিকপ্টারে করে বাড়ি ফিরে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী মিজানুর রহমান তোতা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি উপজেলার শ্যামপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার মাঠে অবতরণ করে। এমন দৃশ্য দেখে দারুণ খুশি তাদের স্বজন ও এলাকাবাসীরা।
মিজানুর রহমান তোতা সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী-শান্তি বেগম দম্পতির ছেলে।
শেষমেশ মিজানুর রহমান তোতা একা নন মালয়েশিয়া থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর রাজধানী ঢাকা থেকে তার মা শান্তি বেগম, শ্বশুর নজরুল ইসলাম, তার সাত বছরের ছেলে মুরসালিন, ১৪ বছরের মেয়ে মিম আক্তার ও ছোটভাই নজরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
হেলিকপ্টারে গ্রামের বাড়ি পৌঁছার পর তাকে তার ছোট হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে বরণ করেন এলাকাবাসী।
স্কুলশিক্ষক আতাউর রহমানসহ স্থানীয়রা জানান, জীবিকার তাগিদে গত ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় কাজ করছেন মিজানুর রহমান তোতা। তার আয়ে সচ্ছল এখন পুরো পরিবার। শুধু তাই নয়, তার সহায়তায় উপকৃত হয়েছেন নিকট আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার মানুষ। সুখে-দুঃখে এলাকার মানুষের পাশে থাকেন।
মালয়েশিয়া প্রবাসী মিজানুর রহমান তোতা বলেন, মায়ের স্বপ্ন ছিল বিদেশ থেকে ঢাকায় আসার পর মাকে নিয়ে হেলিকপ্টার করে বাড়ি ফিরব। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমার মতো প্রত্যেক সন্তানের উচিত মায়ের স্বপ্নপূরণ করা। আমার হেলিকপ্টারে বাড়ি ফেরায় এলাকাবাসীও খুশি হয়েছে ও ফুল দিয়ে বরণ করেছেন।
ছোটভাই নজরুল ইসলাম বলেন, হেলিকপ্টার ভাড়া ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঢাকাতে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে সময় লেগেছে ২০ মিনিট।
এদিকে তারা ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরবেন এমন খবরে সহস্রাধিক মানুষ শ্যামপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার মাঠে ভিড় জমান। গ্রামের মানুষ কখনো হেলিকপ্টার কীভাবে মাটি ছোঁয় তা দেখেননি। হেলিকপ্টার কখনো এত কাছ থেকেও দেখিনি। প্রচণ্ড বাতাসে চারদিকে যেন ভূমিকম্প। নিরাপত্তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছে কামারখন্দ থানা পুলিশ।
মন্তব্য করুন