..
মিয়ানমারের কারাগারে বন্দি থাকা ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরে এসেছেন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে মিয়ানমারের একটি জাহাজে করে তাদেরকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডাব্লিউটিএ ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
দেশে ফিরে এসে কারাগারের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন তারা।
ফিরে আসা এসব বাংলাদেশিদের সিংহভাগই দালালের খপ্পরে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় কেউ হেঁটে, আবার কেউ সাগর পথে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমার বাহিনীর হাতে আটক হয়ে তাদের অবস্থান হয় কারাগারে।
ফেরত আসা বাংলাদেশি নাগরিক উখিয়ার মনখালী গ্রামের বদিউল আলমের ছেলে সালা উদ্দিন ও একইগ্রামের শাহ আলমের ছেলে মো. ফারুখ জানান, মিয়ানমার কারাগারে তাদের ওপর চালান হতো নিয়মিত নির্যাতন। দিনে এক বেলা খাবার দেওয়া হতো, তাও আবার খাওয়ার অনুপযোগী। কোনো কথা বলা যায় না। বললেই নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হতো। এভাবেই অন্ধকারে কেটেছে তাদের দশটি বছর।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মিয়ানমারের সিটওয়ে বন্দর থেকে তাদের নিয়ে মিয়ানমারের একটি জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। জাহাজটি বুধবার সকালে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছায়। পরে ওই জাহাজ থেকে বাংলাদেশি জাহাজে করে কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে পৌঁছালে ১০ জন করে দলবদ্ধভাবে নামিয়ে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র মতে, মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা ১৭৩ জনের মাঝে ১২৯ জনের বাড়িই কক্সবাজারে। বাকিদের মাঝে ৩০ জন বান্দরবানের, ৭ জন রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ির। এছাড়াও নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার রয়েছে একজন করে।
ফেরত আসা ১৭৩ জনের মধ্যে ১৪৪ বাংলাদেশি বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে মিয়ানমারে বন্দি ছিলেন। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে আগেই। বাকি ২৯ জনের সাজার মেয়াদ শেষ না হলেও এই ফেরত পাঠানোর উদ্যোগের সময় তাদেরকে বিশেষ ক্ষমার আওতায় আনা হয়। বিকেল চারটা নাগাদ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও যাদের স্বজনরা আসেনি তাদের জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। সেখান থেকেই তাদের ঘরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এর আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছিলেন, কারান্তরীণ বাংলাদেশিদের নিয়ে যে জাহাজটি দেশে পৌঁছাবে তাতে করেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন