তন্ময় উদ্দৌলা, ফরিদপুর
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জীবিত থেকেও মৃত রুস্তম আলী

রুস্তম আলী মীর। ছবি : কালবেলা
রুস্তম আলী মীর। ছবি : কালবেলা

ফরিদপুরের নগরকান্দার চরযশোরদি ইউনিয়নের আশফোরদী গ্রামের রুস্তম আলী মীর একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। ৮১ বছর বয়সী রুস্তম আলী মীরকে ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বাস্তবে জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি এখন মৃত।

এ ছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সরকারিভাবে থেকে পেতেন প্রতিবন্ধী ভাতা। জীবিত এ ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করায় তার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডটিও বাতিল করে দিয়েছে সমাজসেবা অফিস। ফলে গত চার বছর ধরে ভাতাবঞ্চিত শারীরিক প্রতিবন্ধী রুস্তম আলী।

এ বিষয়ে রুস্তম আলীর কন্যা মোসা. রোকসানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করায় সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ভোটার তালিকা থেকে তার নাম বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। তাই ভোটাধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। অপরদিকে তার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল হওয়ায় আর্থিক সংকটে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন ।

প্রতিবন্ধী রুস্তম আলী মীর কালবেলাকে বলেন, আমি জীবিত থাকতেই আমাকে মৃত দেখানোর কারণে আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে দিয়েছে সমাজসেবা অফিস। আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারি না। ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় আমাকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত দেখানো হয়েছে। আর আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে অন্য কাউকে ভাতা পাইয়ে দিতেই এ কাজ করেছে তারা।

কারা করেছে এ কাজ? এর জবাবে বৃদ্ধ রুস্তম আলী বলেন, আমার প্রতিবেশি কুদ্দুস আলী মীরের যোগসাজশে মুকন্দপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সি টাকার বিনিময়ে আমাকে মৃত দেখিয়েছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে মৃত ঘোষণা করেছে ওরা। এতে আমি আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমার ক্ষতি যারা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই এবং আমার ক্ষতিপূরণ চাই।

স্কুলশিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সি বলেন, রুস্তম আলী মীরের প্রতিবেশী কুদ্দুস আলীর মীরের তথ্যের ভিত্তিতে রুস্তম তাকে মৃত ঘোষণা করে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ফরম জমা দেওয়া হয়েছিল। আমি নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। এখানে আমার কোনো ত্রুটি নেই।

প্রতিবেশী কুদ্দুস আলী মীর ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, স্কুলশিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সিকে আমি চিনি না। শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সি আমার কাছে তথ্য নিতে আসেনি। রুস্তম আলী মীরের সম্পর্কে আমি এ ধরনের কোনো তথ্য তাকে দেইনি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহকারীদের ভুলের জন্য মূলত এমনটি হয়েছে। যা একটা বড় গাফিলতি। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রুস্তম আলী মীরের মেয়ে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষযটি খতিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়া দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমি অন্যায়ের কাছে মাথানত করার মতো লোক না : এ্যানি

একাধিক মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ফারুক

প্রতিদিন ২টি করে খেজুর খেলে কী ঘটে শরীরে? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

কুয়েটে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থী বহিষ্কার

এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড, মাঠে যা ঘটেছিল (ভিডিও)

খালেদা জিয়া কেমন আছেন, জানালেন মির্জা ফখরুল

নারী ইউপি সদস্যকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামী পলাতক

কফি পান করার সেরা সময় কখন?

সাংবাদিকনেতা সোহেলকে মামলায় জড়ানোয় বিএআরএফের তীব্র নিন্দা

গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরের পর বিবস্ত্রের অভিযোগ

১০

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধে সত্যিকারের দেশ গড়া সম্ভব : গোলাম পরওয়ার

১১

না ফেরার দেশে গিটারিস্ট সেলিম হায়দার

১২

ইয়ামির বিস্ফোরক মন্তব্য

১৩

টঙ্গী জোড় ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু

১৪

নিখোঁজের ৩ দিন পর পুকুরে মিলল হৃদয়ের মরদেহ

১৫

অস্ট্রেলিয়ায় খোলা জায়গায় ভারতীয়র মলত্যাগের ভিডিও ভাইরাল

১৬

এশিয়া কাপের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা ভারতের

১৭

দেশে ভিন্নমত প্রকাশ করলে তাকে শত্রু হিসেবে দেখা হয় : মির্জা ফখরুল

১৮

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

১৯

নাশকতার পরিকল্পনার সময় ধরা খেলেন হারুন

২০
X