মুহাম্মদ আশরাফুল হক ভূঞা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তীব্র গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর

হরেক রকমের হাতপাখা। ছবি : কালবেলা
হরেক রকমের হাতপাখা। ছবি : কালবেলা

হাতপাখা তৈরি ও ব্যবহারের ইতিহাস বহু প্রাচীন। হাতপাখার প্রচলন ছিল আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছর আগে গ্রিক-রোমান যুগেও। বৈদ্যুতিক পাখার যুগে অনেকটা হারিয়েই যেতে বসেছে হাতপাখা। তবে দেশে বর্তমানে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে হাতপাখার কদর বেড়েছে। লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা ও তীব্র গরমে মানুষের ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে হাতপাখা। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর হাতপাখা নাড়িয়ে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। হাঁস-ফাঁস অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষদের। হাট বাজার ও বিপনি বিতানে আসা মানুষদের কাছে কদর বেড়েছে হাতপাখার। তাছাড়া লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের ভরসা হাতপাখায়।

কেন্দুয়া শহরের সাজিউড়া মোড়ে কথা হয় মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রেতা সুজন মিয়ার সঙ্গে।

এ বিক্রেতা জানান, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার চাহিদা শুরু হয়। তবে গরম বেশি পড়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে শহরে হাতপাখার কদর বেড়েছে। আকার ও মান ভেদে বাঁশের তৈরি এসব পাখা ৪০ থেকে ৫০ পিস পাখা বিক্রি হচ্ছে।

শহরের সাউদপাড়া মোড়ে কথা হয় হাতপাখা বিক্রেতা রাকিব আহমেদের সঙ্গে।তিনি বাইরে থেকে এসব বাঁশের তৈরি পাখা কিনে এনেছেন। আর কাপড় ও সূতার তৈরি পাখাগুলো ময়মনসিংহ জেলা থেকে কিনেছেন।তিনি ঘুরে ঘুরে শহরের কলেজমোড়, বাসস্ট্যন্ড ও কেন্দুয়া বাজারে বিক্রি করছেন এসব পাখা। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০টি পাখা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে পাখার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়তো ৯ থেকে ১০ টাকা। এখন সেই হাতপাখা পাইকারি প্রতি পিস ১৫ থেকে ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

এসব ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা আক্ষেপ করে জানান, প্লাস্টিকের বানানো পাখা ও বিভিন্ন বাহারি ডিজাইনের রেডিমেড পাখা তাদের ব্যবসায় ঢল ফেলেছে।

তারা আরও জানান, এ বছর গরমের শুরুতেও হাতপাখার চাহিদা এত ছিল না। হঠাৎ করে গরম বেশি পড়ায় এবং শহরে পোশাক কিনতে আসা মানুষদের কাছে বেশি বিক্রি হচ্ছে এসব পাখা।

কথা হয় শহরে দিগদাইর মোড়ে হাতপাখা কিনতে আসা ছবি আক্তারের সঙ্গে। তিনি জানান, একে তো প্রচণ্ড গরম, সেইসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং। পোশাক দেখার আগেই শরীর গরমে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি বাসার জন্য আজ চারটা হাতপাখা নিয়ে নিলাম।

এদিকে শিক্ষক খাইরুল ইসলাম জানান, দিন দিন হাত পাখার কারিগররা এ পেশা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। একসময় বিপুল সংখ্যক লোক এ পেশায় জড়িত থাকলেও প্লাস্টিক ও রেডিমেড পণ্যের সঙ্গে তাল না মেলাতে পেরে পেশা পরিবর্তন করছে। সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে বাঁশের তৈরি ক্ষুদ্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রত্যাশা করছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্লে-অফে হায়দরাবাদ ছাড়াও ৩ বিষয় কলকাতার বিপক্ষে

ভূমধ্যসাগরে অনাহারে ৩ দিন ধরে ভাসছিলেন ৩৫ বাংলাদেশি

ময়মনসিংহের ৩ উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে

উপজেলা নির্বাচন / ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ৮

জাল ভোট দেওয়ায় যুবকের কারাদণ্ড

উপজেলা নির্বাচন / দুই ঘণ্টায় কত শতাংশ ভোট পড়ল?

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েও পায়নি ইরান

‘চোখে দেখি না তাতে কী, আমার ভোট যেন নষ্ট না হয়’

ডেসটিনির পরিচালনা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ

শেষ বক্তব্যে কী বলেছিলেন রাইসি

১০

নরসিংদীতে তিতাস কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল

১১

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ১২

১২

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড / এসএসসির ৭৫ হাজার উত্তরপত্র পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন

১৩

বিদ‍্যুৎ সংযোগ নেই, তবুও ৬ মাসের বকেয়া বিল পরিশোধের নোটিশ

১৪

এবার আরেকটি পর্বত জয় করলেন সেই বাবর

১৫

আজও উন্নতি নেই ঢাকার বাতাসে

১৬

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

১৭

হজ পালনে সৌদি গেলেন ৩২ হাজার ৭১৯ যাত্রী

১৮

যেভাবে দেখবেন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ

১৯

অস্তিত্ব হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বলরাম হাড়ি মন্দির

২০
X