ফেনীর সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক, ভ্রুণ হত্যাসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন সাদিয়া খান আদুরী ওরফে সিমরান সাদিয়া নামে এক তরুণী।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ফেনীর একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের ডেকে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
সাদিয়া খান আদুরী অভিযোগ করে বলেন, গত আট মাস আগে কক্সবাজারে শুটিং করতে গিয়ে বিজয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক। বিজয় বিয়ে করবে বলায় ফেনীতে এসে তার বোনের বাসাসহ কয়েকটি জায়গায় বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করি আমরা। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিজয় ভ্রুণ হত্যা করতে বাধ্য করে। তার পরিবারসহ সবাই জানে যে, বিজয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। এ অবস্থায় বিজয়কে বিয়ের কথা বললে সে কালক্ষেপণ করতে থাকে।
তিনি বলেন, আমার সব মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেওয়ায় আমি গত ২৮ এপ্রিল বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সহযোগিতা চাই। তিনি গ্রাম পুলিশসহ বিজয়ের বাড়িতে পাঠায় আমাকে। কিন্তু বিজয় ওই দিন আমার সঙ্গে ছলচাতুরী করে প্রতারণার মাধ্যমে আমাকে হয়রানি করে। আমাকে প্রতারিত করে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জোর করে ভিডিও রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেমে ছেড়ে দেয়। আমাকে সহযোগিতা করায় চেয়ারম্যান মিলনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রপাগাণ্ডা তৈরি করে সে। যা আমি তখন বলতে না পারায় সাংবাদিকদের জানাতে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি স্ত্রীর অধিকার আদায় করে তার সঙ্গে সংসার করতে চাই। আমি তাকে ছাড় দিচ্ছি, কিন্তু ছেড়ে দেব না। আমি প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তাতেও কাজ না হলে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। তবুও আমি আমার অধিকার আদায় করে ছাড়ব।
চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয় বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এগুলো করতেছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়ায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। সে শোকজের জবাব দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা ছাত্রলীগের পরামর্শে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, গত ২৮ এপ্রিল এক তরুণীর সঙ্গে আরও এক মেয়েকে নিয়ে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এসে ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা বলেন। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান।
তিনি বলেন, আমি গ্রামপুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তাদের বাড়ি পাঠিয়েছি। গ্রামপুলিশ সদস্যরা বাইরে অবস্থানের সময় বিজয় তাদের নিয়েই অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যান বলে জানতে পেরেছি।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদীপ রায় কালবেলাকে বলেন, বিষয়টা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন