রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পৌর সাত নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত শতবর্ষী প্রাচীন স্কুল রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের ভেতর দিয়ে চলে গেছে পাকা সড়ক। ফলে ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা যায়, তৎকালীন রেলের বড় বাবুদের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর জন্য রেলওয়ের নিজস্ব ৫০ শতাংশ জমির ওপর ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ স্কুল। এখন আর আগের সেই জৌলুস নেই। বিদ্যালয়ের মাঝখান দিয়ে নির্মিত হয়েছে পাকা রাস্তা। সেখানে সারা দিন দাপিয়ে বেড়ায় মোটরসাইকেল, ট্রাক আর নসিমন, করিমন। ফলে যে সমস্ত অভিভাবক নিরুপায় হয়ে এখানে সন্তান ভর্তি করান সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকেন দুর্ঘটনার। কয়েক বছরের ব্যবধানে ঘটে দুটি দুর্ঘটনা। পাভেল ও সরমী নামে দুই শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে।
রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানাজ পারভীন বলেন, স্কুলের মধ্যে দিয়ে পাকা রাস্তা হওয়ার ফলে আমাদের সারাক্ষণ সতর্ক হয়ে চলতে হয়। এখান দিয়ে নসিমন, করিমন, দ্রুত গতির মোটরসাইকেলের কারণে স্কুলের ছাত্রছাত্রী এক রকম বন্দি অবস্থায় আছে। সবচাইতে খারাপ ব্যাপার হলো অ্যাসেম্বলির সময়ে যখন ছাত্রছাত্রীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে তখন দুই পাশ থেকে মোটরসাইকেল আর নসিমন-করিমনের উচ্চ আওয়াজ আসে সরে গিয়ে তাদের রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়ার জন্য।
স্কুলটি ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত। তবে এই স্কুলের অনেক সমস্যা। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে কোনো টয়লেট নেই। স্কুলের কোনো বাউন্ডারি নেই। যে কারণে স্কুলের পাশ দিয়ে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। স্কুলের মাঝ দিয়ে পাকা রাস্তা থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা হয়। তিনি আরও বলেন, এই স্কুলে আমি নিজেও শিক্ষার্থী ছিলাম। তখন থেকে দেখে এসেছি স্কুলের অনেক সমস্যা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে। আশ্বাস পাওয়া যায়, সমাধান হয় না।
পৌর সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার কিয়াম শিকদার বলেন, শতবর্ষী বয়সী একটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুলের আলাদা টয়লেট নেই এটা দুঃখজনক। স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিরাপদের জন্য অবশ্যই স্কুলের বাউন্ডারি ও টয়লেট প্রয়োজন। এ দিকে বাউন্ডারি না থাকায় চারপাশের অনেক জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা স্কুলের বাউন্ডারির মাঝে নিরাপদে খেলাধুলা করতে পারবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তাছাড়া স্কুলের বাউন্ডারি যাতে হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করব।
মন্তব্য করুন