ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এএসপি-এসআইর বিরুদ্ধে মামলা, বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

এএসপি মো. মিজানুর রহমান ও পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
এএসপি মো. মিজানুর রহমান ও পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। অভিযুক্তরা হলেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমান এএসপি মো. মিজানুর রহমান এবং একই থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলাম।

রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ কে এম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী শাহজাহান কবির সাজু বলেন, গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আদালতে যে মামলাটি করেছিলেন, সেটিতে লেখা ১ নম্বর আসামির নাম কেটে দেন সাবেক ওসি মিজানুর ও এসআই মাজহারুল। তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন। এসব ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলার তদন্ত করবেন ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন। বাদী ন্যায়বিচার পাবে বলে প্রত্যাশা করছি।

গত ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। ওইদিনই বিচারক এ কে এম ছিফাতুল্লাহ আবেদনটি আমলে নেওয়ায় রেজিস্ট্রার খাতায় মামলা (২৭৭/২৫) হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়।

এদিকে মো. মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত। আর মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হয়েছেন। তিনি কোথায় কর্মরত তা জানা যায়নি।

মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলে কিছুদিন পর আবারও অসুস্থ হয়ে যান। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে আবারও বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই কয়েক বছর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা চলছিল। ২০১৫ সালে গুরুতর অসুস্থ হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বসায় নিয়ে আসার পরদিন (একই বছরের ২ জানুয়ারি) মারা যান শফিকুল ইসলাম।

নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন আহমেদ বলেন, আমার বাবাকে কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এরমধ্যে এক নম্বর আসামি ছিলেন নজরুল ইসলাম। তার নাম কেটে দিয়ে অন্যজনের নাম লেখা হয়। তাই আমরা মামলার খোঁজ নেইনি। এরই মধ্যে চার্জশিট হয়ে গেছে। ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলামের নাম সরিয়ে ছিলেন। তদন্তেই তা প্রমাণিত হবে।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি।

এরপর ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করা হয়। ওইদিনই অভিযোগটি থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক।

ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে এসআই মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে বলেন, ‘মামলাটি থানায় এসেছে, আপনার (বাদীর) টিপসই লাগবে। বাদী সরল মনে ওসি ও এসআইয়ের কথা বিশ্বাস করে টিপসই দেন।’

পরে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, অন্য একটি মামলা লিখে বাদীর সই নেওয়া যে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়েচে। তাতে বাদীর নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা মো. আবদুর রশিদের নাম লিখে রাখা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে : আব্দুল হালিম

গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ, তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, কেয়ারটেকারকে ঘিরে সন্দেহ

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশনা

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক

৩০ আগস্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন

জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন

বছর ঘুরে ফিরল সেই জুলাই 

১০

৩৬ জুলাই বিপ্লব ও নির্মম নির্যাতনের মধ্যেও বেঁচে ফেরার গল্প

১১

৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ / এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা

১২

খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষের অভিযোগ

১৩

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ‘সান্তাল হুল’ দিবস উদযাপন

১৪

২৯৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করল চসিক

১৫

যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন ইউনূস-রুবিও

১৬

করোনার ‘ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণা’, অতঃপর...

১৭

ইরানে একাধিক ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

১৮

ঢাবি শিক্ষার্থী সৌমিকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

১৯

ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবিসাসের অফিসরুম ভাঙচুর

২০
X