দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। মনোনয়ন বিতরণ, জমা, যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এখন ভোট চাইতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ক্যাম্পাসে বইছে নির্বাচনী উন্মাদনা।
তবে এসব কিছু স্পর্শ করতে পারেনি স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের গুরুতর আহত হওয়া ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। সংঘর্ষের এক মাস পেরিয়ে গেলেও তারা এখনো হাসপাতালের বিছানায়। তাদের পরিবার বলছে, দীর্ঘ চিকিৎসার পরও তারা পরিপূর্ণ সুস্থ হতে পারেনি। তাদের পরিপূর্ণ সুস্থ হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
গত ৩০ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর ফটক এলাকায় এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দুই দিনব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ইমতিয়াজ ও মামুন মাথায় গুরুতর জখম পান। রাতেই নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর তাদের লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ইমতিয়াজ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী। দুই সপ্তাহ আইসিইউতে থাকার পর ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। তার বাম পাশ অচল, নিজে নিজে বসতে পারেন না।
অন্যদিকে সমাজতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ১ সেপ্টেম্বর সাপোর্ট খুলে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে। তার মাথার খুলির একটি অংশ এখনো ফ্রিজে সংরক্ষিত আছে, কয়েক মাস পর তা আবার বসানো হবে।
ইমতিয়াজের বড় ভাই আসাদুজ্জামান সজীব কালবেলাকে বলেন, ইমতিয়াজের বাম পাশ অবশের মতো। বাম হাত ও পা নাড়াতে পারে না। নিজে নিজে উঠতেও পারে না। সবসময় অস্থিরতা করে। ধরে উঠে বসালেও শুয়ে যেতে চায়। তার ফিজিওথেরাপি চলছে। হাসপাতাল থেকে তাকে রিলিজ দিয়ে দিতে চাচ্ছে।
তবে আমরা বলেছি, অন্তত একা একা হাঁটতে পারা পর্যন্ত আমরা হাসপাতালে রাখতে চাই। সুস্থ হয়ে একা একা যেন ওয়াশরুমে যেতে পারে। তার বাকি চিকিৎসার জন্য যে ধরনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন, তাদের যেন এখানে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাকে এখান থেকে ওখানে দৌড়াদৌড়ি করার মতো অবস্থা এখনো হয়নি।
চাকসু নির্বাচনের বিষয়ে কিছু জানে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাকসু নির্বাচনের কথা তাকে আমরা বলেছি। তবে সে কোনো কিছু বলেনি।
মামুনের বড় ভাই মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, মামুন নিজে নিজে হাঁটতে পারে৷ তবে আচরণ কিছুটা ছোট বাচ্চার মতো। কথা কিছু বুঝে, কিছু বুঝে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আরও কিছুদিন পর মাথার খুলি প্রতিস্থাপন করবেন।
চাকসু নির্বাচনের বিষয়ে কিছু জানে কিনা জানতে চাইলে বলেন, নির্বাচন হবে এটা তাকে জানিয়েছি। তবে বাকি আর কিছু জানে না।
পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, তারা দুজনই ভালো আছে। তাদের আমরা ডিসচার্জ দিতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আরও কিছুদিন থাকুক।
মন্তব্য করুন