বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক চলছে। রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে বৈঠকটি শুরু হয়।
এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের কথা রয়েছে।
হোটেল সোনারগাঁয়ে এ বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠক করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সকাল ১০টায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে একান্ত বৈঠকে বসেন তৌহিদ হোসেন ও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী।
এরপর প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক শুরু হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে একটি বিশেষ বিমানে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ইসহাক দার। তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম।
গত আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির পর ইসহাক দারকে নিয়ে পাকিস্তানের মন্ত্রিসভার তৃতীয় সদস্য ঢাকায় এলেন। গত জুলাইয়ে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। আর গত বুধবার ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান।
ইসহাক দার সফরের প্রথম দিনেই ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৃথকভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি বৈঠক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিসরে নতুন বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে এভাবে নির্দ্বিধায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার সুযোগ পায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় সেই প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের কেউ সফরে এলে সেসব রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। তবে বর্তমান সময়ে এ চিত্র পাল্টেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে এই বৈঠকগুলো এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো, যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি রাজনৈতিক সংলাপ কূটনৈতিক সৌজন্যের চেয়ে রাজনৈতিক বার্তাই বেশি বহন করছে বলছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বৈঠক শেষে পাকিস্তান হাইকমিশনের আয়োজনে বিএনপি, এবি পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে নৈশভোজে অংশ নেন ইসহাক দার।
মন্তব্য করুন