আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে জাতির নবজন্মের মহোৎসব— এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা বারবার বলেছি— ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে। সেটি হবে মহোৎসবের নির্বাচন, যদি আমরা ঐকমত্যের মাধ্যমে ফয়সালা করতে পারি। এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি হবে জাতির নবজন্ম।”
তিনি আরও বলেন, “জাতির সত্যিকার নবজন্ম হবে— এটা শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি এক ঐতিহাসিক রূপান্তর। এত ত্যাগ, এত রক্ত—সবকিছুর স্বার্থকতা নিহিত থাকবে যদি আমরা এই নবজন্মের সূচনা করতে পারি।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শুরুতে যখন এই কমিশনের ধারণা সামনে এলো, আমি নিজেও দ্বিধায় ছিলাম— এটা আদৌ টিকবে কি না। কিন্তু দীর্ঘপথ অতিক্রম করার পর আজ আমি অভিভূত। আমরা যেভাবে সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছি, তা বিশ্বজুড়ে নজর কাড়বে।”
নিজের বক্তব্যে তিনি ঐতিহাসিক সুযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের হাতে এখন আলাদিনের প্রদীপের মতো সুযোগ এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আমাদের সেই শক্তি এনে দিয়েছে। চাইলে ছোটখাটো কিছু অর্জন করতে পারি, আবার চাইলে পুরো জাতিকে নতুনভাবে গড়ার পথেও হাঁটতে পারি। এই সুযোগ একবারই এসেছে, আর দ্বিতীয়বার আসবে না।”
কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনারা ইতোমধ্যেই ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায় রচনা করেছেন। এখন শুধু এটিকে নিখুঁতভাবে সমাপ্ত করা দরকার। এর মধ্য দিয়েই নতুন জাতির জন্ম ঘটবে।”
প্রধান উপদেষ্টা সতর্ক করে দেন, “এবার আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঐকমত্যের এই পথেই আমরা এগোবো, নির্বাচন সফল করব এবং জাতি হিসেবে মহাউৎসবের যাত্রা শুরু করব।”
সংলাপে এ সময় আরও বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ ও এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
মন্তব্য করুন