কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না’

বক্তব্য রাখছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
বক্তব্য রাখছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘আইন হলো কোনো জাতির নৈতিক ইতিহাস, যা ন্যায়ের ভাষায় লেখা হয়। আর ইতিহাস হলো—কেন সমাজকে আরও ভালো হতে হবে, তারই অনুসন্ধান।’

শনিবার (৮ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছরপূর্তি (হীরক জয়ন্তী) ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি তার প্রয়াত মা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক (যিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং পরবর্তীতে একই বিভাগের শিক্ষিকা ছিলেন) অধ্যাপক ড. সুফিয়া আহমেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি ছিলেন সেই বিরল প্রজন্মের একজন, যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নৈতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। তার জীবন ছিল নারীর একাডেমিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার নৈতিক শুদ্ধতার প্রতীক, যা এখনো আমাকে প্রভাবিত করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দিনে আপনাদের সামনে দাঁড়ানো মানে স্মৃতি ও নিয়তির এক মহামিলনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছরের যাত্রা কেবল একাডেমিক সাফল্যের ইতিহাস নয়, বরং এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।’

বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না। এটিকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়। আর সময়ের সঙ্গে বিচার বিভাগকে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে তাকে সংস্কার করতে হয়। গত ১৫ মাসে আমরা বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি এবং সেটি এখনো চলমান আছে।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, বরং নৈতিক; যাতে প্রতিষ্ঠান ক্ষমতাকে নয়, মানুষকে সেবা দেয়; কর্তৃত্ব বৈধতার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিচার বিভাগ জনগণের আস্থার নৈতিক অভিভাবকে পরিণত হয়।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থার সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে—ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, ফিলিস্তিন ও থাইল্যান্ড। এই সংযোগের উদ্দেশ্য হলো—আইনের পাশাপাশি ইতিহাস ও দর্শনের আন্তঃবিষয়ক জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে বিশ্বজনীন মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠা করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি কেবল একাডেমিক উদযাপন নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রভাবের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ বারবার প্রমাণ করেছে—ইতিহাস আমাদের মূল্যায়ন করে অর্জনে নয়, বরং প্রচেষ্টার সততা ও নিষ্ঠার মানদণ্ডে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৫০০ টাকা বাজিতে ডুব, হঠকারী সিদ্ধান্তে প্রাণ গেল যুবকের

একদিকে ভয়ংকর অ্যানাকোন্ডা, অন্যদিকে মজার স্পঞ্জবব

মঞ্চের বিশেষ চেয়ার সরিয়ে সাধারণ চেয়ারে বসেন তারেক রহমান

গণসংবর্ধনায় যাওয়ার পথে বিএনপির গাড়িবহরে হামলা

তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে সোহেল তাজের পোস্ট

ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যে আহ্বান জানাল সৌদি

বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

চলন্ত মিনিবাসে আছড়ে পড়ল বিস্ফোরকবাহী ড্রোন, নিহত ২

বড়দিনে অদ্রিজার ইচ্ছে

৫০ বছরের বেশি সময় পর সরাসরি ভোট হচ্ছে যে দেশে

১০

কুকুরছানা পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সেই নারীর বিরুদ্ধে মামলা

১১

মাকে দেখার আগে গণসমাবেশে যাওয়ার কারণ জানালেন তারেক রহমান

১২

ইনস্টাগ্রামে বড় পরিবর্তন, যা জানা জরুরি

১৩

মালিকানা সংকটে থাকা চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব নিল বিসিবি

১৪

দল ছাড়লেন এনসিপির আরও এক শীর্ষ নেতা

১৫

ভারতে যাওয়ার সময় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৬

এবার হীরার সন্ধানে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

১৭

একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই : তারেক রহমান

১৮

লাঙ্গল প্রতীক না পাওয়ায় অনশনে জাতীয় পার্টির নেতা

১৯

ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়নপত্র নিলেন জামায়াত আমির

২০
X