কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে ৭ জানুয়ারি ভোট দিন

রাজধানীর সিরড্যাপ মিলনায়তনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা। ছবি: সংগৃৃহীত
রাজধানীর সিরড্যাপ মিলনায়তনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা। ছবি: সংগৃৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, এবারের নির্বাচনে কে নির্বাচনে জয়ী হবে সেটি বড় কথা নয়- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এবং বাঙালির বাংলাদেশ বিষয়টি প্রমাণ করতে এবারের নির্বাচনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অসাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে সব নাগরিককে তার ভোটাধিকার প্রয়োগে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবাইকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে হবে। কমপক্ষে ৬০-৬৫ শতাংশ ভোট পড়লে প্রশ্নাতীতভাবে আবারও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সিরড্যাপ মিলনায়তনে আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান পরাজিত হলেও তাদের প্রেতাত্মারা এদেশে রয়ে গেছে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নীতি বাদ দিয়ে ধর্মীয় রাজনীতি শুরু করে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। নানা অজুহাতে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিয়ে তারা এই ধারা এখনো অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বহুবছর পর এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ওই ধর্মীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এটি একদিকে যেমন ভালো দিক, অপরদিকে নানা চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নিলের উপস্থাপনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন- সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশ গুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, সাবেক সচিব কবি আছাদ মান্নান প্রমুখ।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় এবারের নির্বাচনকে অভিনব বলা যেতে পারে। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। সেগুলো মোকাবিলা করতে সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন- অসাম্প্রদায়িকতা রক্ষায় নির্বাচনের দিন মানুষকে তার গণতান্ত্রিক অধিকার ভোট প্রয়োগে কেন্দ্রে যেতে হবে। তারাই নির্বাচিত হোক, যারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার। সম্প্রতিতে বিশ্বাসী, চিহ্নিত করে ভোটারদের আঘাত করে না, তেমন দল। আমরাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভোট দিবো। বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরোনো করে, এমন দলকে ভোট দিবো। যারা দুষ্ট তাদের সংখ্যা কম। এদেশে অনেক ভালো মানুষ। তাই ঐক্যের ডাক দিচ্ছি। সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ১৯৯১ সালে যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অংশ নিয়েছে, জামায়াত তাদের পক্ষ নিয়েছে। একটি পক্ষ বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে দেখে এসেছে। যার ফলাফল সবশেষ আদম শুমারি অনুযায়ী সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর হার ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ সংখ্যালঘুরাওতো মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত নাই। কিন্তু ৮-৯টি কেন্দ্রের নাম আছে, হিন্দুদের পরিষ্কার করে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রে গেলেই বিপদ হবে। ফল দেখলে বুঝতে পারবো। ফল বিপক্ষে গেলে হামলা চালাবে। এই হুমকি থাকলে কীভাবে সংখ্যালঘুরা ভোট কেন্দ্রে যাবে? তবে এবারের ফলাফলের যে ধারা, কোনো স্বাধীনতা বিরোধীর উপস্থিতি সেখানে থাকবে না। এটাই স্বস্তির বিষয় আমাদের জন্য।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শামছুদ্দিন চৌধুরি মানিক বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের পর পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন, ধর্মের রাজনীতি চলবে না। পরে ধর্মীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাকে খুন করে ২৬ বছর দেশ শাসন করে এটির ডালপালা ছড়িয়ে গেছে। ওই গোষ্ঠী এখন জনগণকে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ করছে। এটা অপরাধ। হিন্দু বা অন্য সম্প্রদায় বিশ্বাসী লোকদের ভোটদানে বাধা দিতে পারে ধর্মীয় এই রাজনৈতিক অপশক্তি। এদিকে সবার সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, রাষ্ট্রের রাজনীতিতে যাতে ধর্ম না আসে, ৭২ সালের সংবিধানে ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদ যোগ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কারণ ধর্মীয় সংঘাতের গডফাদার ধর্মীয় রাজনীতি। এটি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা দরকার। ৫২ বছরে এসেও স্পষ্টভাবে ওই শক্রদের চিহ্নিত করা উচিত। তাহলে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে, তারাও ভবিষ্যতে অবদান রাখতে পারবে।

মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে সবার জন্য, সেখানে সম্প্রীতি থাকবে নাতো কি থাকবে? একতরফা ভাবে এক ধর্ম বা এক চিন্তার মানুষ সব সুবিধা পাবে, সেই বাংলাদেশ আমরা চাই না। সবার অধিকার থাকবে, সেই বাংলাদেশ চাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিরিয়ায় চাপ কমাতে ইসরায়েলকে থামতে বললেন ট্রাম্প

পরোপকারী সঞ্জীবের এমন মৃত্যু কেউ মানতে পারছে না

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

ভারতের অনুমতি মিলল দুদিন পর, ভুটানের পথে ট্রানশিপমেন্ট

মোংলা বন্দরের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন

বরিশালে ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ মঙ্গলবার

টঙ্গীতে জোড় ইজতেমায় আরও এক মুসল্লির মৃত্যু

দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি : বাবুল

পরবর্তী সরকারের প্রতি আসিফ নজরুলের আহ্বান

১০

পাসপোর্ট অফিস থেকে রোহিঙ্গা যুবক আটক

১১

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য খালেদা জিয়ার সুস্থতা প্রয়োজন : মান্নান

১২

এভারকেয়ারে নিরাপত্তা জোরদার, পুলিশের ব্যারিকেড

১৩

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে কয়েদির মৃত্যু

১৪

খালেদা জিয়া কাঁদলে বাংলাদেশ কাঁদে : আমান

১৫

ছাত্র অধিকার পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা

১৬

গভীর রাতে খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন মির্জা ফখরুল

১৭

বাংলাদেশ-মালদ্বীপ কৃষি সহযোগিতায় নতুন অঙ্গীকার

১৮

সরকার কড়াইলের বাসিন্দাদের নাগরিক অধিকারের তোয়াক্কা করছে না : সাকি

১৯

কক্সবাজারে ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত

২০
X