অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান পুলিশ সুপার থাকার সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে। তখন চালিয়েছেন জঙ্গিবিরোধী বড় অভিযান। ভূমিকা রেখেছিলেন জঙ্গিবাদ দমনে। পদোন্নতির পর দায়িত্ব পান র্যাব-১৪ এর অধিনায়কের। পুরোনো অভিজ্ঞতায় সেখানেও জঙ্গি দমনে রাখছেন ভূমিকা। তার অসীম বীরত্ব এবং সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিও মিলেছে এবারের পুলিশ সপ্তাহে, ভূষিত হয়েছেন পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেলে (বিপিএম)।
এবার র্যাব কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম খানসহ ৩৫ জন পান সর্বোচ্চ পদক বিপিএম। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্তদের তা পরিয়ে দেন।
মহিবুল ইসলাম খানের পদক প্রাপ্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই কর্মকর্তা জঙ্গি দমন ও জঙ্গি তৎপরতা নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছেন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সংগঠক মো. আজিজুল হক ওরফে গোলাপ পালিয়ে ছিলেন নির্বিঘ্নে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর এই দুর্ধর্ষ জঙ্গিকে গ্রেপ্তারে সফল হন র্যাব অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান। এ ছাড়াও এই কর্মকর্তা দুটি পৃথক জঙ্গি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জেমবি জঙ্গি মো. মোস্তফা ওরফে মোস্ত ওরফে শামীম এবং ৭ বছর ধরে পলাতক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সূরা সদস্য মো. আ. কাইয়ুমকে গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান। তাদের মধ্যে মোস্তফা জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য ছিল।
জঙ্গি দমনে সফলতার পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালের দণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান তিনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একাত্তরে গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধী সুলতান মাহমুদ ফকিরকে গ্রেপ্তার করেন তিনি। ওই বছরের জুনে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী মো. মোখলেছুর রহমান ওরফে তারাকে গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান তিনি।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে একটি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির কর্মকর্তাসহ ৩ জনকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অভিযোগ পেয়েই র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান ওই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেন এবং র্যাব পরিচয় দেওয়া অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার ও অপহৃতদের উদ্ধার করেন।
মহিবুল ইসলাম খান এর আগেও সাহসিকতা, কর্মদক্ষতা ও প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিপিএম পদক পেয়েছিলেন। তিনি ২০০৫ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে র্যাব-১৪ তে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান।
মন্তব্য করুন