নানা নাটকীয়তা শেষে অবশেষে মহাসমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। মহাসমাবেশে অংশ নিতে দলে দলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন হাজারও নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলের পর নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ভিআইপি সড়কে।
অনেকদিন পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হওয়ায় সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিকেলের দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান করলে পুলিশ তাদের বারবার সরিয়ে দেয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর দলে দলে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকলে সেই চিত্র পাল্টে যায়।
নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ব্যাপক হারে বাড়তে থাকলে কিছুটা নীরব হয়ে পড়েন উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা। তবে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির কার্যালয়ের সামনের সড়কে বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেল থেকে রাখা প্রিজনভ্যান, সাঁজোয়া যান এখনও রয়েছে।
আরও পড়ুন : গণগ্রেপ্তার বন্ধে পুলিশকে চিঠি বিএনপির
শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ শুরু করবে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে বিকেলে ২৩ শর্তে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
মহাসমাবেশের অনুমতির পর বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি মহানগর নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এতে মহাসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটি ও শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা ছিলেন।
মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মহাসমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দলের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনা সহকারে শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন। বিলম্বে হলেও আগামীকালের মহাসমাবেশে পুলিশ কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে আবারও আহ্বান জানাই, আপনারা আগামীকাল নয়াপল্টনস্থ বিএনপির মহাসমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ সহযোগিতা করবেন।
আরও পড়ুন: মহাসমাবেশের আগেই বিএনপির ৪৭৩ নেতাকর্মী কারাগারে
তিনি বলেন, আমি আশা করি সমাবেশে আসার পথে জনগণ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনো প্রকার বাধা প্রদান করা হবে না। একইসঙ্গে গত দুদিনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আটককৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানান তিনি।
অন্যদিকে মহানগর বিএনপি উত্তর আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শুক্রবার নয়াপল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমাদের এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ।
গত ১২ জুলাই বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎভাবে এক দফার ঘোষণা দেয়। এই একদফার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান। এক দফা দাবিতে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই সারা দেশে মহানগর ও জেলায় পদযাত্রার পর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি করছে।
বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো মহাসমাবেশের তারিখ ছিল আজ ২৭ জুলাই। কিন্তু বিএনপিকে নয়াপল্টন অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুলিশ মহাসমাবেশের অনুমতি না দিয়ে গোলাপবাগে সমাবেশ করার অনুরোধ জানালে গতকাল রাতে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো মহাসমাবেশের ঘোষিত তারিখ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার করার ঘোষণা দেয়।