বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী বলেছেন, বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতে বরাদ্দে জনগণকে হতাশ করেছে। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মৌলিক অধিকার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। যার কারণে দারিদ্র্যের হার বেড়ে বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী দরিদ্র থেকে অতিদরিদ্র হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপির জাতীয় স্থায়ী পরিষদের সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী বলেন, আমরা প্রতিবারই দেখি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ জিডিপির অনুপাতে খুবই কম। বিএসপি মনে করে, মানবসম্পদ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। জিডিপির ২% এর নিচে এ বরাদ্দ। অথচ প্রয়োজন ছিল অন্তত ৪ শতাংশ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাখাতে, বিশেষত কারিগরি শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ জরুরি। শিল্প-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করা, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট রূপরেখা বা নীতি আমরা বাজেটে দেখছি না। বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানোতে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রক্রিয়া এলডিসি উত্তরণে সহায়ক হলেও তা দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের অভিন্ন চেতনা হলো বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর হবে, এটাই জনগণ আশা করে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া বৈষম্যমূলক। এতে যারা কর প্রদান করছেন, তাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। এ ধরনের বিধান দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। রাজনৈতিক সরকারগুলোও এ রকম সুযোগ দিয়ে এসেছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারও একই আচরণ করবে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, যদি কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে না হয়- তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটির ফান্ড তৈরি, ১৫০টি উপজেলায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু, বাজেট ঘাটতি সহনীয় রাখা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের কিছু ভাতা বাড়ানো, কৃষিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি, সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ ভাতা দেয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার প্রচলিত রাজনৈতিক সরকারের বাজেটের ধরনকে অনুসরণ না করে নতুন এক উদাহরণ তৈরি করতে পারতো। যেখানে সকল প্রকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিশ্চিত হতো এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা যেত। তা করতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
মন্তব্য করুন