মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম রূপকার ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার (১৪ জুলাই)। ২০২০ সালের এই দিনে ঢাকায় মারা যান তিনি।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা এবং মরহুমের জন্মস্থান টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ‘শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’র উদ্যোগে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মরহুমের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম পরিচালিত এতিমখানাসমূহে উন্নত খাবার পরিবেশন, মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অন্যদিকে কালিহাতীতে মরহুমের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মসজিদ-মন্দিরে দোয়া ও প্রার্থনা, কুরআনখানি এবং সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্ম নেওয়া শাজাহান সিরাজ ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ছাত্র-রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৪-’৬৫ এবং ১৯৬৬-’৬৭ দুই মেয়াদে দু’বার তিনি করটিয়া সা’দত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৬৭ সালে স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস-এ যোগ দেন।
১৯৭০ সালের ৬ জুন গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলে (বর্তমানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) তার কক্ষে নির্মিত হয় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রথম পতাকা। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে বিশাল এক ছাত্র-জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমানের সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাজাহান সিরাজ। তিনি ১৯৭০-’৭২ মেয়াদে অবিভক্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন। জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি পলিথিন নিষিদ্ধকরণ, টু স্ট্রোক ইঞ্জিন বন্ধ, ইটভাটার দূষণ রোধের মাধ্যমে পরিবেশ আন্দোলনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন।
মন্তব্য করুন