ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে এবার সংগঠন পুনর্গঠনের কথা চিন্তা করছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। নাম পরিবর্তন, কর্মসূচির পুনর্মূল্যায়ন, নেতৃত্বে পরিবর্তন ও যাচাই-বাছাইসহ এমন নানা পরিবর্তনের আলোচনা সামনে আসছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে হতাশাজনক ফল পায় বাগছাস সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল। ডাকসুর ২৮টি পদের একটিতেও তারা জিততে পারেনি। এমনকি ভোটের হিসেবে ভিপি, জিএসের অবস্থান ছিল পঞ্চম স্থানে। তবে হল সংসদে তুলনামূলক ভালো করেছে সংগঠনটি। সেখানে ছাত্রশিবিরের পর তাদের অবস্থান। অন্যদিকে জাকসুর ফলেও আসেনি প্রত্যাশিত সাফল্য। জাকসুতে ২৫ পদের মধ্যে সমাজসেবা সম্পাদক পদসহ ২টি পদে জয় লাভ করে বাগছাস সমর্থিত প্যানেল।
এমন ফলাফলের পর নড়েচড়ে বসেছেন সংগঠনটির নীতিনির্ধারকরা। সংগঠনের আমূল সংস্কারের কথা ভাবছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টিতেওব(এনসিপি) এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডাকসুর ফলাফলের পর গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নির্বাহী কাউন্সিলের সভা হয়। সেখানে নেতাদের অনেকে ডাকসুতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের শোচনীয় পরাজয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। এমন পরাজয়ের পেছনে বিভিন্ন কারণও তুলে ধরেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্যে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভাজনের বিষয়টি বেশি এসেছে। এ ছাড়া প্রার্থীদের অভিজ্ঞতার অভাব ও প্রচারের ক্ষেত্রে যথাযথ কৌশল না থাকার কথাও অনেকে উল্লেখ করেন।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, সংগঠন হিসেবে আমরা নবীন, আমাদের অভিজ্ঞতাও কম। মাত্র ছয় মাসের মাথায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো সামাল দিতে হচ্ছে। ফলত আমরা নিজেদের কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতা, কাঠামোগত ভুল দেখতে পাচ্ছি। সেগুলোকে চিহ্নিত করে পুনর্গঠন ও কর্মসূচির পুনর্মূল্যায়ের কথা ভাবছি। নেতাদের মধ্যে সেই আলোচনা চলমান।
সংগঠন বিলুপ্তের বিষয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ বিলুপ্ত হবে এমন কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি হয়, তাহলে আমরাই জানাব। এখন অবধি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ বিলুপ্তের কোনো আলোচনা নেই। গণমাধ্যমে যে বিষয়টি এসেছে সেটি ভুল। সেখানে শীর্ষ নেতাদের কারও সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলা হয়নি।
কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, আমরা ডাকসুর আগে থেকেই সংগঠন রিফর্ম করা নিয়ে আলাপ চালাচ্ছি। কিভাবে কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছি। মাঝখানে ডাকসু, জাকসু চলে আসায় সেই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন আবার রাকসু, চকসুর আলাপ চলে। এরই মধ্যে রিফর্মেশন প্রসেস নিয়ে কাজ চলমান। আমাদের সংগঠনের বয়স কম, মাত্র কয়েক মাস হয়েছে। এখনো চেইন অব কমান্ড ঠিক হয় নাই, রাজনৈতিক কর্মশালা পর্যন্ত করা হয়নি। আমাদের পূর্বের বহু ভুলভ্রান্তি আছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন অ্যাকমোডেট করতে হয়েছে পরিস্থিতির কারণে। সবকিছু আমলে নিয়ে রিফর্ম করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় সব সদস্যই মৌখিক সম্মতি প্রদান করেছেন। সে সঙ্গে, আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিও রিফর্ম করার দিকে যাব।
মন্তব্য করুন