ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খোন্দকার এম তালহা প্রয়াত বিশিষ্ট ভাস্কর ও শিল্পী নভেরা আহমেদ-এর মরণোত্তর সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক ২০২৫’ তার স্বামী গ্রেগোয়া দ্যু ব্রুন-এর হাতে তুলে দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাস সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এর আগে, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) ফ্রান্সের লা রোশে-গুয়ঁ শহরের ‘নভেরা আহমেদ জাদুঘরে’ এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা নভেরার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার স্বামীর হাতে স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ ও পুরস্কারের অর্থ হস্তান্তর করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, সংস্কৃতিতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার প্রয়াত নভেরা আহমেদকে মর্যাদাপূর্ণ মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান করে। যেহেতু তার স্বামী ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশে গিয়ে পদক গ্রহণ করতে পারেননি, তাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যথাযথ মর্যাদায় এটি হস্তান্তরের জন্য ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসকে দায়িত্ব দেয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা বলেন, নভেরা আহমেদ বাংলাদেশের আধুনিক শিল্প ও ভাস্কর্যের পথিকৃৎ। তার শিল্পকর্ম মানুষের আবেগ, সামাজিক বাস্তবতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে গভীরভাবে ধারণ করে। জাদুঘরে নভেরার শিল্পকর্ম সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের মাধ্যমে তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার জন্য গ্রেগোয়া দ্যু ব্রুন-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গ্রেগোয়া দ্যু ব্রুন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ এই সম্মান প্রয়াত নভেরা আহমেদের শিল্পকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি জানান, টেট মডার্নসহ ইউরোপের বিভিন্ন রাজকীয় সংগ্রাহকগোষ্ঠীর মধ্যে নভেরার কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে তার শিল্পকর্ম লন্ডন ফ্রিজ মাস্টার্স-২০২৫ প্রদর্শনীরও কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
গ্রেগোয়া দ্যু ব্রুন রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং তাদের প্রয়াত নভেরা আহমেদের সৃষ্ট বিভিন্ন ভাস্কর্য ও শিল্পকর্ম ঘুরে দেখান। অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনৈতিক কর্মকর্তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নভেরা আহমেদ ছিলেন একজন বাংলাদেশি ভাস্কর। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম অগ্রদূত এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম বাংলাদেশি আধুনিক ভাস্কর। ১৯৩৯ সালের ২৯ মার্চ বাংলাদেশের সুন্দরবনে তার জন্ম। কর্মসূত্রে তার বাবা সৈয়দ আহমেদ সে সময় সুন্দরবন অঞ্চলে কর্মরত ছিলেন। তবে তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল চট্টগ্রামের আসকারদিঘির উত্তর পাড়ে। পরে তার বাবা চাকরিসূত্রে কলকাতায় অবস্থান করায় নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতা শহরেই।
মন্তব্য করুন