আগামী মার্চ থেকেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অবশ্য পালনীয় রোজা শুরু হতে যাচ্ছে। রমজান মাসে রোজায় যেহেতু অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয় এবং ডায়াবেটিসের রোগীরা ইনসুলিন নেন বা মুখের ওষুধ খান সেহেতু তাদের কিছু পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় রমজান মাসে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।
ডায়াবেটিস রোগীদের কঠোর নিয়মকানুন মেনে খাবার ও ওষুধ গ্রহণ করতে হলেও তারাও রোজা রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারপরও অনেকেই হাইপো বা নানারকম সমস্যায় পড়েন। অনেক ডায়াবেটিস রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের বিষয়ে কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা-
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এসেডবির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন জানান, রমজানের আগে নফল রোজা রেখে ডায়াবেটিস রোগীরা রোজার প্রস্তুতি নিতে পারেন। এতে বোঝা যাবে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না।
তিনি আরও বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ে আলাদা ব্যবস্থাপত্র আছে। সেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রোজার আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে। এছাড়াও রোজার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধ ও ইনসুলিন সমন্বয় করা অত্যন্ত জরুরি।
১. রমজানের ফরজ রোজা সঠিকভাবে আদায়ের জন্য রোজার আগে থেকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে ভালো হয়। ২. চিকিৎসক রোজার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা এবং এ থেকে উত্তরণের উপায়গুলো বাতলে দেবেন। ৩. হাইপো না হওয়ার জন্য খাদ্য, ব্যায়াম এবং ওষুধের সমন্বয় করে দেবেন। ৪. দিন-রাত সুগার পরিমাপ করে ওষুধ সমন্বয়ের ব্যাপারে রোগী ও রোগীর পরিবার সবাইকে শিক্ষা প্রদান করবেন। ৫. প্রত্যেক রোগীর জন্য একই ব্যবস্থা প্রযোজ্য নয় বিধায় রোগীর অবস্থা অনুযায়ী আলাদা ব্যবস্থা নিতে হবে। ৬. রমজানের আগে নফল রোজা রেখেও প্রস্তুতি নেওয়া ভালো। ৭. রোজার জন্য সব স্বাস্থ্যবিধি পালন করেও যদি স্বাস্থ্যহানি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে তাদের রোজা না রাখাই উচিত। সে ক্ষেত্রে ফিদিয়া বা কাজা রাখার বিধান আছে।
১. ব্রিটল ডায়াবেটিস রয়েছে যাদের। অর্থাৎ যে ডায়াবেটিসে রক্তে সুগারের মাত্রা খুব বেশি ওঠানামা করে। ২. যাদের অন্যান্য জটিল অসুখ, যেমন- কিডনি, হৃদরোগ বা কোনো ইনফেকশন ইত্যাদি রয়েছে। ৩. রোজার সময় যেসব ডায়াবেটিস রোগীর ডায়রিয়া বা বমি হয়।
১. যারা শুধু খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
২. যারা মেটফরমিন, গ্লিটাজোনস কিংবা ইনক্রিটিন জাতীয় ওষুধ খান। তবে যারা সালফোনাইলইউরিয়া ও ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাঁদের ঝুঁকি কিছুটা থাকে। ওষুধ ও ইনসুলিনের ধরন অনুযায়ী এর তারতম্য হয়।
মন্তব্য করুন