মানুষের জীবনে ভ্রমণ কিংবা সফর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের মতো এটিও একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
সে হিসেবে যানবাহনে আরোহন করতেই হয়। সফরে নিরাপদ থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহতাআলা শেষ নবী মুহাম্মদ সা. কে পাঠিয়েছেন উম্মতের হেদায়াতের জন্য। সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য। তাই রাসুল (সা.) ভ্রমণে সব ধরনের নিরাপত্তার জন্য কিছু দোয়া শিখিয়েছেন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. সফরের উদ্দেশে বের হয়ে সওয়ারির ওপর পা রেখে তিনবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলতেন। তারপর এই দোয়া পড়তেন। (মুসলিম ১৩৪২) بسم الله الرحمن الرحيم سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনকলিবুন। অর্থ : মহান আল্লাহর পবিত্রতা যিনি একে (বাহন) আমাদের অধীন করে দিয়েছেন, অথচ আমরা একে অধীন করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তনকারী।
হজরত আলী ইবনে রবিআহ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দেখলাম, আলী রা. এর কাছে আরোহণের একটি পশু আনা হলে তিনি এর পা-দানিতে পা রাখতেই বললেন, ‘বিসমিল্লাহ’, এর পিঠে চড়ে সোজা হয়ে বসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ।
তারপর তিনি এ আয়াত পড়লেন, সুবহানাল্লাজি সাখ্খারা লানা হাজা ওয়া মা কুন্না লাহু মুক্বরিনিন।
অর্থ : মহান পবিত্র তিনি, যিনি একে আমাদের অনুগত বানিয়েছেন, তা না হলে একে বশ করতে আমরা সক্ষম ছিলাম না।
নিশ্চয়ই আমাদের আমাদের রব্বের নিকট ফিরে যেতে হবে। (সুরা : আজ-যুখরুফ ১৩-১৪)। পুনরায় তিনি তিনবার ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ ও তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন। এরপর বললেন, ‘সুবহানাকা ইন্নি জালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
অর্থ : (হে আল্লাহ!) আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, আমিই আমার ওপর জুলুম করেছি, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আপনি ছাড়া কেউই গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।
তিনি হেসে দিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আমিরুল মু’মিনিন! আপনি কেন হাসলেন?
তিনি বললেন, আমি যেরূপ করলাম, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও এরূপ করতে দেখেছি।
তিনি যখন হেসেছিলেন তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল! আপনি হাসলেন কেন?
তিনি বললেন, নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তার বান্দার ওপর সন্তুষ্ট হন যখন সে বলে ( হে আমার রব্ব!) আপনি আমার গুনাহ ক্ষমা করুন। আর বান্দা তো জানে, আল্লাহ ছাড়া কেউই গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না। (আবু দাউদ ২৬০২, তিরমিজি ৩৪৪৬)
بِسْمِ اللَّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَحِيمٌ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরসা-হা, ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রহিম। অর্থ : তোমরা এতে আরোহন করো। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। আমার পালনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়ন, মেহেরবান। (সুরা : হুদ : ৪১)
ভ্রমণের মাঝপথে কোথাও অবস্থান করতে হলে এ দোয়া পড়ার নির্দেশ দিয়ে রাসুল (সা.) বলেন, এই দোয়াটি পড়লে, ঘরে ফেরা পর্যন্ত কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। দোয়াটি-
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ من شَرِّ ما خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক। (মুসলিম, হাদিস : ২৭০৮)
অর্থ : আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালেমার মাধ্যমে সব ধরনের ক্ষতি থেকে নিরাপত্তা চাচ্ছি।
মন্তব্য করুন