ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা আর ক্রিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করে আইসিসি। বিশ্বের জনপ্রিয় দুই খেলার দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার চরিত্র এবং ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে বড় পার্থক্য। ফিফা যেখানে সব দেশকে সমানভাবে মূল্যায়ন করে, তার বিপরীত চিত্র আইসিসির ক্ষেত্রে। গুটিকয়েক দেশের কাছে যেন মাথানত করে চলতে হয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
সদ্য শেষ হওয়া এশিয়া কাপে ভারত ক্রিকেট দলের কিছু একরোখা সিদ্ধান্ত আর চূড়ান্ত একগুঁয়েমি নজর কেড়েছে সবার। হাত না মেলানো, ফাইনাল শেষে এসিসির চেয়ারম্যান পাকিস্তানি হওয়ায় তার থেকে শিরোপা না নেওয়া, ম্যাচ শেষে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান—কমবেশি সবই করেছে ভারত। এতকিছুর পরও ভারতের বিপক্ষে আইসিসির অবস্থান কিছুটা নমনীয়। তাদের বিপক্ষে কঠিন কোনো পদক্ষেপ নিতে যেন একাধিকবার ভাবতে হয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে? ভারতের বিরুদ্ধে কেন কোনো পদক্ষেপ, এমনকি বিপক্ষে কিছু বলতে পারে না আইসিসি। মূলত, এর অন্যতম কারণ অর্থনৈতিক কাঠামো। আইসিসির সদস্যসংখ্যা ১০৫টি। এর মধ্যে পূর্ণ সদস্য দেশ মাত্র ১২টি। এই ১২ সদস্যের মধ্যে আবার তিন দেশের আয় বেশি। আইসিসি মূলত সেই তিন সদস্যের আয়ের ওপরই নির্ভরশীল। ভারত সেই তিন দেশের একটি। এ ছাড়া সেই তালিকায় রয়েছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেটবিশ্বে এই তিন দেশকে দেখা হয় মোড়ল হিসেবে।
আইসিসির আয়ের বড় একটা উৎস আসে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে। আর সে আয়ের সিংহভাগই আসে ভারতের কাছ থেকে। এরপর ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর এই তিন দলের দাপটও বেশি। আবার, আইসিসির আয়ের বেশির ভাগই যায় তিন মোড়লের কোষাগারে।
আর্থিক দিকের কারণেই মূলত আইসিসি তিন মোড়লের বিপক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত সহজে নিতে পারে না। তবে এ ব্যাপারটি মোটেও ক্রিকেটের জন্য ভালো ইঙ্গিত বহন করে না। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আইসিসি ছোট-বড় সব দলকে সমান চোখে দেখবে এবং সবার জন্য আইনও সমান হবে—এমনটাই প্রত্যাশা ক্রিকেটপ্রেমীদের।
মন্তব্য করুন