

দেশ–বিদেশের ফুটবলেই কিছু ম্যাচ থাকে যেগুলো র্যাঙ্কিং বা অবস্থানের ঊর্ধ্বে, আলাদা উত্তাপ ও আবেগে মোড়া। বাংলাদেশ-ভারত লড়াই ঠিক সেরকমই। বাছাইপর্বে যাওয়ার পথ আগেই বন্ধ হলেও ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামীকালকের ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনা যেন পূর্ণমাত্রায়। অনলাইনে টিকিট মিলিয়ে যেতে মাত্র ছয় মিনিটই যথেষ্ট ছিল—বাকি সব নিয়েই বলছে দুই দেশের সমর্থকদের প্রতীক্ষার পারদ।
এই তীব্র আবহেই আজ সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হলেন ভারত দলের কোচ খালিদ জামিল। তার কণ্ঠেও ফুটে উঠল ম্যাচের গুরুত্ব ও চাপের বাস্তবতা। খুব সরাসরি ভাষায় তিনি বললেন, ‘এটা তো চাপের খেলা।’
এশিয়ান কাপ বাছাই থেকে বাংলাদেশ ও ভারত—দুই দলেরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তবে তবুও ম্যাচকে হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই, বিশেষ করে প্রতিপক্ষের মাঠে, গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে। জামিলও বুঝতে পারছেন ঢাকার প্রত্যাবর্তন খেলা সহজ হবে না তার দলের জন্য।
‘চাপ আছে কি না?’—প্রশ্ন শুনে কোচের সরল স্বীকারোক্তি, “হ্যাঁ, চাপ আছে। তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি চাপের ম্যাচ। আমরা ইতিবাচক ফল চাই, আর সেটা পেতে কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কোনো পথ নেই।”
ম্যাচের আগে ভারত দল আজ সকালে জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্মও বাড়তি সতর্কতা তৈরি করছে সফরকারীদের মধ্যে। বিশেষ করে আলোচনায় আছেন লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী—বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ৪ গোল, সর্বশেষ নেপালের বিপক্ষে করেছিলেন দুটো।
তবে জামিল কোনো ব্যক্তিকে আলাদা করে নজর দিতে নারাজ, “আমরা এক জনকে নয়, পুরো দলকে নিয়ে ভাবছি। বাংলাদেশে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। ম্যাচটা সিরিয়াস।”
ইতিহাসেও ভারত এগিয়ে—১৯৭৮ থেকে এখন পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৩২ বার। ভারত জিতেছে ১৬টি, বাংলাদেশ ২টি, বাকি ১৪টি ড্র। সর্বশেষ শিলংয়ে প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হলেও এবার দুই দলই সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও নতুন সমীকরণ নিয়ে নামবে মাঠে।
বাংলাদেশ-ভারতের লড়াই কখনোই নিছক বাছাইয়ের কাগুজে হিসাব নয়; থাকে মর্যাদার প্রশ্ন, থাকে প্রতিপক্ষকে হারানোর আলাদা উদ্দীপনা। কালও তার ব্যতিক্রম হবে না—এটা নিশ্চিতই জানিয়ে রাখলেন ভারত কোচ জামিল।
মন্তব্য করুন