পুরো নাম ড্যামিয়ান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তবে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নামেই পরিচিত তিনি। যদিও আর্জেন্টিনা দলের সতীর্থরা তাকে ‘দিবু’ বলে ডাকে। বর্তমান সময়ে তাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলকিপার হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে তিনি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের পাশাপাশি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলায় খেলছেন।
জন্ম ও ক্লাব ক্যারিয়ার ১৯৯২ সালের ২ সেপ্টেম্বর আর্জেন্টিনা মার দেল প্লাটাতে জন্ম নেওয়া মার্টিনেজ ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন নিজ শহরের ক্লাব ইন্ডিপেন্ডিয়েন্টের যুব দলের হয়ে। ২০০৯ সালে তাকে ট্রায়ালের জন্য ডাকে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল। ট্রায়ালে ভালো করায় তার সঙ্গে চুক্তি করে ইংলিশ ক্লাবটি।
২০১০ সালে আর্সেনাল মূল দলের স্কোয়াডে জায়গা করেন নেন। যদিও প্রায় দুই বছর তাকে বসে থাকতে হয় সাইড লাইনে। পরে ২০১২ সালে তাকে অক্সফোর্ড ইউনাইটেডে ধারে পাঠানো হয়।
পরের বছর আবারও ফেরেন আর্সেনালে। লিগ কাপের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে আর্সেনালের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। পরের বছর আবারও তাকে ধারে পাঠানো হয়। এবার চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ড ইউনাইটেড।
পরের বছর আবারও আর্সেনালে ফেরেন তিনি। ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয় তার। ওই বছর ম্যানসিটিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে এফএ কাপ জেতে আর্সেনাল। এতে ক্যারিয়ারে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পান তিনি। একই বছর অ্যান্ডারলেখটের বিপক্ষে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক হয় তার। পরপর দুই ম্যাচে বদলি গোলকিপার হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।
ভালো খেলার পরও মার্টিনেজকে আবারও চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব রথারহ্যাম ইউনাইটেডে ধারে পাঠানো হয়। পরপর তিন বছর ধারে খেলার পর অবশেষে অ্যাস্টন ভিলার কাছে তাকে বিক্রি করে আর্সেনাল।
২০২০ সালে ইংলিশ ক্লাবটির সঙ্গে চার বছরের চুক্তি করেন মার্টিনেজ। এবার সাবেক ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডের বিপক্ষে অ্যাস্টন ভিলার জার্সিতে অভিষেক হয় তার। সেই মৌসুমে রেকর্ড ১৫টি ম্যাচ ক্লিন শিট করেন তিনি। ২০২২ সালে তার সঙ্গে আরও তিন বছরের চুক্তি করে অ্যাস্টন ভিলা।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার
২০০৯ সালে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে অভিষেক হয় তার । এ ছাড়া ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত খেলেছেন আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলে। তবে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে জায়গা পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে লম্বা সময়।
যদিও ২০১১ সালে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য ডাক পেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে। এরপর ২০১৯ সালে জার্মানি ও ইকুয়েডরের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য দ্বিতীয় দফায় ডাক পান তিনি।
এর দুই বছর পর ২০২১ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। মার্টিনেজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সে বছর কোপা আমেরিকা শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। ফলে ২৮ বছর পর কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তারা। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস জেতেন তিনি। পরের বছর ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে লা ফিনালিসিমা জেতে আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচেও গোলপোস্টের নিচে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।
কাতার বিশ্বকাপে আরও দুর্দান্ত ছিলেন মার্টিনেজ। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকে দুটি পেনাল্টি শট রুখে দেন তিনি। ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকে পেনাল্টি শট রুখে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। তার পারফরম্যান্সের জন্য কাতার বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস জেতেন।
মন্তব্য করুন