কাতারের মালিকানায় পিএসজি যাওয়ার পর থেকেই ক্লাবটির একটাই লক্ষ্য- ইউরোপীয় ফুটবলের সেরার মুকুট পরা অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন লিগ জয় করা। এ লক্ষ্যপূরণে পিএসজি দলে ভিড়িয়েছিল মেসি-নেইমারের মতো বড় বড় তারকাদের।
সেই স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ হয়ে তারা দল ছেড়েছেন। এই মৌসুমে মেসি-নেইমার না থাকলেও ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বিশ্বকাপজয়ী এই ফরাসির ওপর ভরসা রেখে পিএসজি এবার পৌঁছে গিয়েছিল আসরের সেমিফাইনাল পর্যন্ত। তবে ফাইনালে আর পৌঁছানো হলো না। ঘরের মাঠে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় নিতে হলো ফরাসি জায়ান্টদের।
মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে পিএসজির ঘরের মাঠ পার্ক দ্য প্রিন্সেসে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। এর আগে নিজেদের ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতে এগিয়ে ছিল তারা। দ্বিতীয় লেগে ম্যাটস হামেলসের গোলে দুই লেগ মিলে ২-০ ব্যবধানে জয়ে ১১ বছর পর ইউরোপ সেরার আসরের ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। কামব্যাকের নেশায় ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়েছে এমবাপ্পে-ডেম্বেলেরা। বল দখলে প্যারিসিয়ানরাই ছিল এগিয়ে। তবে বরুশিয়ার রক্ষণে সে অনুযায়ী কাঁপন ধরালেও ভাঙতে পারেনি। উল্টো জার্মান ক্লাবটি রক্ষণ সামলে পিএসজির আক্রমণের জবাবও দিয়েছে।
ম্যাচের ২৫ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি। তবে ডি-বক্সের ভেতর থেকে এমবাপ্পে শট নেওয়ার আগেই পেছন থেকে দুর্দান্ত এক ট্যাকেলে দলের বিপদ মুক্ত করেন ডর্টমুন্ডের জয়ের নায়ক ম্যাটস হামেলস।
পরের মুহূর্তেই অবশ্য আক্রমণে কাঁপন ধরায় ডর্টমুন্ড। তবে করিম আদিয়েমির শট ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলকিপার দোনারুম্মা। প্রথমার্ধে দুই দল আর কিছু করতে না পারায় গোলশূন্য শেষ হয় সেই হাফ।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই পিএসজি ও তার সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন জার্মান ডিফেন্ডার হামেলস। ম্যাচের ৫০ মিনিটে কর্নার থেকে দারুণ হেডে দলকে এগিয়ে দেন ৩৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার।
এরপর পিএসজি যেন গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। একাধিক পরিবর্তন এনেও তেমন কিছু করতে পারেননি লুইস এনরিকের শিষ্যরা। ফরাসি ক্লাবটির আক্রমণ বারবার থমকে গেছে ডর্টমুন্ডের রক্ষণের দেয়ালে। ডিফেন্ডারদের পাশাপাশি বরুশিয়ার সুইস গোলরক্ষক কোবেলও অসাধারণ খেলেছেন।
পিএসজির সঙ্গে এই ম্যাচে অবশ্য ভাগ্য ছিল না। না হলে পুরো ম্যাচে মোট ৪ বার বরুশিয়ার বারপোস্টে পিএসজি ফরোয়ার্ডদের শট লাগে কীভাবে! ভাগ্য আর দুর্দান্ত ডর্টমুন্ডে তাই ফাইনাল স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হলো লুইস এনরিকের শিষ্যদের। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে যখন গোলের জন্য মরিয়া পিএসজি, ৮৪ মিনিটে গোলপোস্টে লাগে এমবাপ্পের শট। ৩ মিনিট পর ভিতিনহার দূরপাল্লার শটও ফেরে গোলপোস্টে লেগে। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েছে পিএসজি। কিন্তু বারবারই ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়নদের।
এর আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলেছিল বরুশিয়া। সেই ফাইনালের মঞ্চও ছিল ইংল্যান্ডের বিখ্যাত স্টেডিয়াম ওয়েম্বলি। কাকতালীয়ভাবে এবারও সেই একই স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলতে নামবে জার্মান জায়ান্টরা।
আরও একটি কাকতালীয়র সম্ভাবনা রয়েছে। ১১ বছরের আগের মতো এবারও ফাইনালে ডর্টমুন্ডের প্রতিপক্ষ হতে পারে বায়ার্ন মিউনিখ। সে জন্য অবশ্য বায়ার্নকে, রিয়াল মাদ্রিদ বাধা টপকাতে হবে আগে।
মন্তব্য করুন