২০১৩ সালে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল গোপালগঞ্জ মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। এ ক্রীড়া স্থাপনার পেছনে ব্যয় করা বিপুল অর্থ অবশেষে পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের কল্যাণে। ১০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা এ ক্রীড়া অবকাঠামোতে পরিপূর্ণ কাবাডি কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জ মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স ২০ বছরের জন্য বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের অনুকূলে লিজ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। নির্মাণের পর থেকে ফাঁকা পড়ে থাকা এ কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে ইনডোর জিমনেশিয়াম, সুইমিংপুল, হোস্টেল এবং দুটি খেলার মাঠ। দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে কমপ্লেক্সের বিভিন্ন অংশ নষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দ্রুতই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কমপ্লেক্সে ২ হাজার কেবি ট্রান্সফার থাকলেও লোড অনুমোদন নেই। ৮৪ হ্যালোজেন বাতির মধ্যে ৫০টি সচল, বাকি ৩৪টি বিকল। ইনডোরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। ওয়াশরুমের ফিটিংস নষ্ট। ৫০ মিটার সুইমিংপুলের মেঝের টাইলস নষ্ট, কোথাও ফুলে উঠেছে। পুল নির্মাণের পর সাব-মার্সিবল পাম্প দিয়ে পানি তোলা সম্ভব হয়নি। হোস্টেল ভবনের নিচের অংশ দেবে যাওয়ায় বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। খেলার মাঠ জঙ্গল হয়ে আছে। এ ছাড়া পুরো কমপ্লেক্স বাউন্ডারির মধ্যে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। যে কারণে ভারি বৃষ্টিপাতের সময় জটিলতা তৈরি হয়।
‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মডেল দেখে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দেবে। প্রস্তাবিত মডেলের মধ্য থেকে সবচেয়ে ভালোটির আদলে কাবাডি কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে’—কালবেলাকে বলেন বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ।
কমপ্লেক্স সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কাবাডির কার্যক্রম যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তা বিশ্বমঞ্চ থেকে সাফল্য আনার জন্য যথেষ্ট নয় বলেই আমাদের কাছে মনে হয়েছে। এ কারণে কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগে ক্রীড়া অবকাঠামো বরাদ্দ করায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং এনএসসি কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন জানিয়েছে, প্রস্তাবিত কাবাডি কমপ্লেক্সে থাকবে পরিপূর্ণ একাডেমিক কার্যক্রম। থাকবে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দল ছাড়াও পুরুষ ও নারী জাতীয় দলের অনুশীলন সুবিধা। ফিটনেস ট্রেনার, রেফারি, কোচ এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল অফিশিয়ালদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে এ কমপ্লেক্সে। নানা সুবিধা এমনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে, যাতে কাবাডি খেলুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ স্থাপনা ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়, যা বাংলাদেশকে ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন