জেন-জি বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরও নেপালের অনেক এলাকায় নতুন করে বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পুডেল ও প্রধানমন্ত্রী ওলির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন সড়কে মিছিল ও ঢিল ছোড়াছুড়ির পর রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দক্ষিণ এশীয় দেশটির একাধিক এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। কোথাও কোথাও কারফিউ ভেঙেই বিক্ষোভ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। অনেক এলাকায় বিক্ষোভের মধ্যে গ্রেপ্তারেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট পুডেলের বাড়িতে বিক্ষোভকারীদের ঘুরে বেড়ানো ও ভাঙচুরের নানান ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দাহাল প্রচন্ড ও শের বাহাদুর দেউবা এবং জ্বালানিমন্ত্রী দীপক খাডকার বাসভবনেও বিক্ষোভকারীরা হামলা চালিয়েছে। নেপালি কংগ্রেসের সদর দপ্তরেও আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে কী কী করণীয় সেটা ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রী ওলি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন।
কাঠমান্ডুতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করলেও বলপ্রয়োগ করছে না। লাউডস্পিকারে তারা বিক্ষোভকারীদের ঘরে ফিরে যেতে বলার সময় বিক্ষোভকারীদের দিক থেকে ‘সরকারে থাকা খুনিদের সাজা দাও, শিশু হত্যা বন্ধ করো’ স্লোগান শোনা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতি থেকে সরে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ এখন কার্যত প্রধানমন্ত্রী ওলির সরকারের দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওলির জনপ্রিয়তা এমনিতেই নামছিল।
সোমবারের বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের একটা অংশ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলে; এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের পদত্যাগের করেছেন।
আমরা এখানে বিক্ষোভ করতে এসেছি কারণ আমাদের তরুণ ও বন্ধুদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা চাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক এবং এই সরকার উৎখাত হোক। কেপি ওলিকে বিতাড়িত করা উচিত, পার্লামেন্ট ভবনের ক্ষতবিক্ষত প্রাচীরের বাইরে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক বার্তা সংস্থাকে এমনটাই বলেছেন একজন বিক্ষোভকারীদের।
এত তরুণ ও শিক্ষার্থী, যাদের মাথা লক্ষ্য করে এই হিটলারসদৃশ কেপি ওলির সরকার গুলি করেছে, তাদের হত্যার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। যতক্ষণ এই সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, আমাদের মতো জনগণ ভুগতেই থাকবে, বলেছেন আরেক বিক্ষোভকারী দুর্গানা দাহাল।
নেপালি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গগন থাপাও বিক্ষোভে ১৯ মৃত্যুর নৈতিক দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
মন্তব্য করুন