রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘যদি পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে, তাহলে আলোচনায় বসতে রাজি আছি।’ মঙ্গলবার ক্রেমলিনে এক বিশেষ বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
পুতিন বলেন, যুদ্ধের ভয়াবহতার শেষ হওয়া নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। যুদ্ধ অবিলম্বে থেমে যাবে যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে। তারা যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়, তাহলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে।
এপি নিউজ জানায়, পুতিন দাবি করেন, ২০২২ সালে রুশ ও ইউক্রেনীয় আলোচকরা শান্তিচুক্তির একটি খসড়া তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এর ভেতরেই পশ্চিমা চাপে বেঁকে বসে কিয়েভ। তবে এখনো রাশিয়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে হারতে দেখতে চায় এবং ইউক্রেনীয়দের সাম্প্রতিক আক্রমণে তারা সাফল্য দেখতে পাচ্ছে। এ সময় পুতিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে এমন অনেকেই আছে, যারা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখতে চায় না। এটা এমন এক যুদ্ধ হবে, যেখানে কোনো জয়ী দল থাকবে না।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ক্রেমলিনে এই বৈঠকে পুতিন ১৮ রিপোর্টারকে প্রশ্ন করার সুযোগ দেন। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা তিনি প্রশ্ন শোনেন এবং জবাব দেন। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন পুতিন।
চলতি মাসের ৪ তারিখে রুশ সেনাদের ওপর বড় পরিসরে হামলা চালায় ইউক্রেন। পুতিনের দাবি, এই হামলায় রুশদের তুলনায় ইউক্রেনীয়দের ১০ গুণ ক্ষতি হয়েছে।
পুতিন বলেন, ‘শত্রুপক্ষ কোনো দিক থেকেই সফল হতে পারেনি।’ উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, ইউক্রেনের ১৬০টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে রাশিয়া। এদিকে, রাশিয়ার ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হয়েছে মাত্র ৫৪টি। তিনি জানান, এর ভেতর বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক ঠিক করা যাবে। যদিও পুতিনের এসব দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
পুতিন বৈঠকে আরও জানান, মস্কো কৃষ্ণসাগরের বন্দরে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানিবিষয়ক চুক্তি থেকে সরে আসার কথা ভাবছে। এই চুক্তি রাশিয়ার কোনো কাজে আসছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পুতিনের অভিযোগ, পশ্চিমা দেশগুলো রুশ কৃষিপণ্য রপ্তানি নিয়ে তাদের দেওয়া কথা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বের শুরুতেই কিয়েভ দখলের খুব কাছাকাছি চলে যায় রাশিয়া। কিন্তু তখন কিয়েভ দখল না করেই আবার পিছু হটে রুশরা। মঙ্গলবারের বৈঠকে এ বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় উঠলে পুতিন বলেন, ‘আমাদের কি কিয়েভে ফেরত যাওয়া উচিত?’ রহস্যভরা কণ্ঠে তিনিই উত্তর দেন, ‘শুধু আমিই এর উত্তর দিতে পারব।’
মন্তব্য করুন