আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে কিশোর বয়সে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারানো শামীমা বেগমের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারের আইনি লড়াইয়ের সর্বশেষ প্রচেষ্টায় হেরে গেলেন তিনি। খবর আলজাজিরার।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রায়ে আদালত বলেছেন, ২৪ বছর বয়সী শামীমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠোর হতে পারে, তার এই দুর্ভাগ্যের লেখক তিনি নিজেই—এসব বিষয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে দুটি বিষয়ের কোনোটার সঙ্গে একমত বা দ্বিমত পোষণ করা আদালতের উচিত হবে না। আমাদের একমাত্র কাজ হলো তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি বেআইনি ছিল কি না, তা দেখা। আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এটি বেআইনি ছিল না। তার আপিল খারিজ করা হলো।
শামীমার পরিবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে আইএসে যোগদান করতে পূর্ব লন্ডনের বাসা ছাড়েন তিনি। এ সময় তার সঙ্গী হয়েছিলেন তার দুই বান্ধবী খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আবেস। এদের মধ্যে খাদিজা একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। তবে আমিরার ভাগ্যে কী হয়েছে তা এখনো অজানা।
সিরিয়ায় গিয়ে শামীমা আইএসে যোগদান করেন এবং এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন। সেখানে তার তিনটি সন্তান হয়েছে। তবে তারা কেউ বেঁচে নেই।
২০১৯ সালে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে খোঁজ মেলে শামীমার । এরপর জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। একজন ‘রাষ্ট্রহীন’ মানুষ হিসেবে বর্তমানে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার আল-রোজ বন্দিশিবিরে বাস করছেন শামীমা। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করে যুক্তরাজ্যে ফেরার আবেদন করেন শামীমা।
আদালত আপিল খারিজ করে দিলেও শামীমার দেশে ফেরার আশা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। রায়ে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আইনজীবীদের এই রায় বিবেচনা করার জন্য এখন এক সপ্তাহ সময় আছে। প্রয়োজনে তারা আরও বেশি সময় নিতে পারেন। এ ছাড়া আইনজীবীরা চাইলে এখন মামলাটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যেতে পারবেন।
মন্তব্য করুন