কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০০ এএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৩১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ডাক্তার-নার্সরাও মারধর করেন, ওষুধের বদলে দেন শাস্তি

গাজার বন্দিদের নির্যাতনের খবরে ছবিটি ব্যবহার করেছে আনাদোলু এজেন্সি
গাজার বন্দিদের নির্যাতনের খবরে ছবিটি ব্যবহার করেছে আনাদোলু এজেন্সি

ইসরায়েলে প্রায় সাত মাস বন্দি থাকার পর সম্প্রতি মুক্তি পান গাজার আল–শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। তিনি গাজায় ফিরে সেখানে ঘটা ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি বন্দিরা বিরামহীন নির্যাতনের মুখে মারা যাচ্ছেন। এমনকি ডাক্তার-নার্সরাও তাদের মারধর করেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি কারাগারে অনেক ফিলিস্তিনিকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হয়। তাদের চিকিৎসায় অবহেলা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় না। এভাবে ধুঁকে ধুঁকে বন্দিরা মারা যাচ্ছেন।’ সোমবার (১ জুলাই) সালমিয়া যখন এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন তার পাশে সদ্য মুক্তি পাওয়া অন্য বন্দিরাও ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তাদের অল্প পরিমাণে খাবার দেওয়া হয়। গাজার বন্দিরা খাবারের অভাবে গড়ে ২৫ কেজি ওজন হারিয়েছেন।

নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ইসরায়েলি ডাক্তার ও নার্সরাও নির্যাতনকারীদের অংশ। তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে তাদের শাস্তি দিতেন। ডাক্তার ও নার্সরা বন্দিদের মারধর করেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব বন্ধে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোতে ইসরায়েলি কারাগার পরিদর্শনের আহ্বান জানান তিনি।

গত বছর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলা এবং নাগরিকদের অপহরণের জেরে গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেন নেতানিয়াহু। এতে প্রায় ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় সব স্থাপনা। বাদ যায়নি হাসপাতাল, মানবিক ত্রাণসহায়তার স্টেশনও।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুরোদমে স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ অভিযানে একের পর এক ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এরপর কারাগারে আটকে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আবু সালমিয়ার আগেও কারাগারে ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়ংকর নির্যাতনের তথ্য ফাঁস হয়েছে।

চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, গাজার সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে নেগেভ মরুভূমির একটি বন্দিশালায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের ব্যাপক মারধরসহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

গাজার এসব জনসাধারণকে কোনো গোপন তথ্যের জন্য মারধর করা হয়নি। কেবল প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে তাদের মারধর করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলার জন্য এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্দিশালায় পান থেকে চুন খসার মতো সামান্য কিছু করলেই তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।

এক ইসরায়েলি তেইমানের একটি কারাগারের ছবি সিএনএনকে দিয়েছেন। এ এলাকাটি গাজা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ছবিতে দেখা যায়, লোহার তারের বেড়া দেওয়া একটি খাঁচায় কয়েকশ ফিলিস্তিনি রয়েছেন। তাদের সবার পরনে ধূসর রঙের ট্রাউজার রয়েছে। কারাগারে বন্দি থাকা এক ফিলিস্তিনি চিকিৎসক সিএনএনকে বলেন, তেইমানের বন্দিশালায় প্রায়ই ঘুমন্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতের বেলা এভাবে নির্যাতন করা হয়। তবে এসব অভিযোগ স্বীকার করেনি ইসরায়েল। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বন্দি পরিচালনা করছে বলে জানায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দাঁড়িয়ে থাকা বাসে ধাক্কা, নিহত ২

শিল্পকলায় আসছে নোবেলজয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’

দেড় বছর ধরে অনুপস্থিত, নিয়মিত বেতন তুলছেন স্বাস্থ্যকর্মী

বিএনপি নেতা নুরুল আমিনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ক্ষুধার কষ্ট কমেনি : ডব্লিউএইচও

মালয়েশিয়ায় প্রবাসীকে হত্যা, ৪ বাংলাদেশিসহ আটক ৬

ফোনের ইন্টারনেট স্লো, সহজ ৯ কৌশলে হুহু করে বাড়বে স্পিড 

জন্মদিন যেভাবে উদযাপন করলেন পরী

এই সীমান্তের ৭০ শতাংশ বাসিন্দা মাদক ও চোরাচালানে জড়িত 

জাজিরায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

১০

তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর নতুন বাংলাদেশ

১১

টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে উইন্ডিজ দলে পরিবর্তন

১২

দয়া করে পাগলাটে যুদ্ধ শুরু করবেন না, আমেরিকাকে মাদুরো

১৩

প্রধান উপদেষ্টার সৌদি সফর বাতিল

১৪

শনিবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা

১৫

বাংলাদেশ দলে কে নেয় সিদ্ধান্ত? প্রশ্নের জবাবে মুখ খুললেন মিরাজ

১৬

দ্রুত চার্জিং কি ফোনের ব্যাটারি ক্ষতি করে, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

১৭

ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যদের ভূমিকা কী থাকবে, জানালেন ডিজি

১৮

বাড়তি দামে মিলছে শীতের সবজি

১৯

সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

২০
X