কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় যেসব অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে ভেনেজুয়েলা

সামরিক অফিসারদের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ছবি : সংগৃহীত
সামরিক অফিসারদের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ছবি : সংগৃহীত

যুদ্ধ থেকে এক কদম দূরে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলা। কথার লড়াই ছাড়াও উত্তেজনা আরও বেড়েছে দুই দেশের সামরিক শক্তি বাড়ানোর ঘোষণায়। এ অবস্থায় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন— নিজ দেশের প্রতিরক্ষায় সামরিক সংঘাতে জড়াতে প্রস্তুত তারা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর সামরিক বাহিনীর বিপক্ষে ভেনেজুয়েলা আসলে কতটা শক্তিশালী?

খোদ ভেনেজুয়েলারই এক অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রকে হারানোর স্বপ্ন দেখা একেবারেই অবাস্তব। সম্প্রতি ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পর যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই এ মন্তব্য করেছেন তিনি। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জেনারেল জানিয়েছেন, দেশটির সামরিক সামর্থ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব নয়।

দক্ষিণ আমেরিকার তেলসমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলা বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। দেশটির সামরিক বাহিনীর হাতে রয়েছে পুরনো রুশ ফাইটার জেট, ইরানি ড্রোন, ফরাসি ট্যাংক ও একটি মাত্র জার্মান সাবমেরিন। সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৩ লাখ ৪০ হাজার। তাদের কাছে ১৯৮০-এর দশকে কেনা ১৫টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও আছে।

স্থলবাহিনীর অস্ত্রাগারে রয়েছে ফ্রান্সের ১৭৩টি এএমএক্স-১৩ ট্যাংক, ব্রিটেনের ৭৮টি ট্যাংক এবং জার্মানির তৈরি একটি সাবালো সাবমেরিন। নৌবাহিনীর হাতে আছে একটি ইতালীয় ফ্রিগেট, ৯টি টহল নৌযান, ২৫টি সাঁজোয়া স্পিডবোট এবং সৈন্য বহনে সক্ষম তিনটি ল্যান্ডিং জাহাজ।

২০০০-এর দশকে তেল বিক্রির অর্থে সামরিক শক্তি বাড়াতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছিলেন প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ। সে সময় রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা হয় ২৩টি ফাইটার জেট, ৮টি হেলিকপ্টার, ১২টি অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল ও ৪৪টি ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল ব্যবস্থা। ২০০৬ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এসব অস্ত্র কেনায় খরচ হয়েছিল প্রায় ১১০০ কোটি ডলার।

তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন আধুনিক অস্ত্র হাতে পায়নি ভেনেজুয়েলা। সম্প্রতি তারা ইরানের মোহাজের ড্রোন কিনলেও বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এসব অস্ত্র কার্যকরভাবে কাজে লাগানো কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মাদুরো দাবি করেন, ভেনেজুয়েলার হাতে ৮০ লাখের বেশি মিলিশিয়া ও রিজার্ভ বাহিনী রয়েছে। তবে সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংখ্যা অনেকটাই অতিরঞ্জিত। তাদের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার, মিলিশিয়া বাহিনীতে ২ লাখ ২০ হাজার এবং রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে মাত্র ৮ হাজার।

অতএব, যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার মতো সক্ষমতা ভেনেজুয়েলার হাতে নেই বললেই চলে। তবুও ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষা ও রাজনৈতিক অবস্থান রক্ষায় সামরিক প্রস্তুতিই এখন দেশটির প্রধান ভরসা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চুল পড়া আর খুশকির সমস্যা বাড়াচ্ছেন নিজের ৬ অভ্যাসে

তাসফিনের হাত পুনঃসংযোজন এক বিরল সাফল্য : রিজভী

অভিযানে আটকের পর বহিষ্কৃত যুবদল নেতার মৃত্যু

নির্বাচনে জনগণই তাদের ভোট পাহারা দেবে : সালাহউদ্দিন আহমদ

কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান সরকার

১ যুগের নতুন দিগন্তে কুবিসাস

তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি : আমীর খসরু 

দুর্যোগ মোকাবিলায় স্কাউটদের ভূমিকা অনন্য : শিক্ষা উপদেষ্টা

আইজিপি বাহারুলকে বরখাস্তের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আইনজীবীর চিঠি

নেইমারের বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে নতুন তথ্য জানালেন আনচেলত্তি

১০

ভারতে আজহারির নামে ‘মাহফিলের’ প্রচারণা, যা জানা গেল

১১

পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১২

অতিরিক্ত খাওয়া থামানোর সহজ ১০ উপায়

১৩

ভারত বাদ, বাংলাদেশ-চীনকে নিয়ে জোটের প্রস্তাব পাকিস্তানের

১৪

ফুটবল বিশ্বকাপে ফিফার নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর বিতর্ক

১৫

পাকিস্তান আফগানিস্তান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি, নিহত ৪

১৬

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে স্টোর অফিসার নিহত

১৭

পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, স্থবির জনজীবন

১৮

ফিফার শান্তি পুরস্কার পেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

১৯

বারবার ফোন আনলকে হচ্ছে মস্তিষ্কের ক্ষতি, জানুন কীভাবে

২০
X