পাকিস্তানের দুইটি বিতর্কিত বিলে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তিনি জানান, এই বিল দুটিতে তিনি স্বাক্ষর না করে ফিরিয়ে দেন কিন্তু তার অধীনস্থরা ‘ইচ্ছের বিরুদ্ধে’ কাজটি করেছে।
গতকাল রোববার (২০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি এ কথা জানান। সোমবার (২১ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, এই বিলগুলো পাস হয়ে আইনে পরিণত হলে দেশটির সামরিক বাহিনী আরও ক্ষমতাবান হবে। কারণ, বিলে সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পরিচয় প্রকাশকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীকে অবমাননার জন্য কারাদণ্ডের বিধান চালু করা হয়েছে।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন আইনমন্ত্রী আহমেদ ইরফান আসলাম সাংবাদিকদের জানান, সংবিধান অনুযায়ী, বিলে প্রেসিডেন্টের কাছে সম্মতি দেওয়ার বিকল্প ছিল অথবা ‘সুনির্দিষ্ট মন্তব্য’ সহ বিলগুলোকে পার্লামেন্টের কাছে পাঠাতে পারতেন তিনি।
কিন্তু এসব না করে প্রেসিডেন্ট আলভি ‘ইচ্ছা করে সম্মতি প্রদানে বিলম্ব’ করেন; এবং সম্মতি বা কোনো মন্তব্য ছাড়াই বিলগুলো ফেরত পাঠান, জানান তিনি।
আসলাম জানান, প্রচলিত আইন অনুযায়ী, যেহেতু প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে স্বাক্ষরিত বিল ১০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়নি, তাই এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইনের রূপান্তরিত হয়েছে।
এদিকে দেশটির সিনেট সচিবালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই বিলগুলোতে ‘প্রেসিডেন্ট সম্মতি রয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
বিতর্কিত এই বিলগুলো পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট আলভির কাছে পাঠানো হয়েছিল। আগামী নভেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের উদ্দেশে গত ৯ আগস্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য (সংস্কার) বিল ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী (সংস্কার) বিল দেশটির জাতীয় অধিবেশনে তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়।
‘অফিশিয়াল সিক্রেটস’ নামের বিলে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো গোয়েন্দা কর্মকর্তা, ইনফরম্যান্ট বা সোর্সের পরিচয় প্রকাশ করলে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ঊর্ধ্বে ১ কোটি রুপি (প্রায় ৩৪ হাজার মার্কিন ডলার) জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
আর অপর আইনে বলা হয়েছে, যদি কেউ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে তাহলে, তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
মন্তব্য করুন