কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি কি নতুন কোনো চাল?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই পাকিস্তানকে একটি কৌশলগত মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সামরিক সহায়তা, আর্থিক অনুদান ও কূটনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে পাকিস্তানের পাশে ছিল ওয়াশিংটন।

গত এক দশকে সেই পুরনো সম্পর্ক ক্রমেই জীর্ণ হয়ে পড়ে। জঙ্গিবাদ, চীন ঘেঁষা নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে ভাটা পড়ে।

কিন্তু সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করেই যেন যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান যখন সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তখনই মধ্যস্থতা করে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই শান্তিপূর্ণ হস্তক্ষেপের পুরো কৃতিত্বই ট্রাম্পের কাঁধে তুলে দেয় ইসলামাবাদ।

এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০২৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান সরকার। হোয়াইট হাউসও এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়।

এই অনুকূল পরিবেশে ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রতি নিজের সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটান আরও এক ব্যতিক্রমী উপায়ে- হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনীরকে। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো কোনো পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে এমন কূটনৈতিক সম্মান জানালেন একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

কিন্তু এই একই ট্রাম্প সাত বছর আগে পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার কারখানা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি তার উত্তরসূরি জো বাইডেন পাকিস্তানকে বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিরস্থায়ী শত্রু বা মিত্র বলে কিছু থাকে না- এ কথা আবারও প্রমাণ করছে এই নবজাগ্রত সম্পর্ক। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল পাকিস্তান এখন ট্রাম্প প্রশাসনের মন জয় করতে চাইছে নানা আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিয়ে- শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা, রেয়ার আর্থ মিনারেল সরবরাহ, এমনকি ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টো বিনিয়োগে মার্কিন অংশীদারিত্ব।

সম্প্রতি পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার ওয়াশিংটন সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে পাকিস্তানের আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র।

সব কিছু মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে- এ কি শুধুই একটি সাময়িক রাজনৈতিক সৌজন্য? নাকি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব প্রতিরোধে পাকিস্তানকে ঘিরে নতুন এক কৌশল সাজাচ্ছে ট্রাম্প? উত্তর সময়ই বলবে, তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পাকিস্তানের কাঁধে হাত রাখতে শুরু করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শরীরে নীরব ঘাতক ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, জেনে নিন ৮ লক্ষণ

এনজিওর নামে প্রতারণা, আটক ১

কাতারে হামলার পর বিশ্ববাজারে বাড়ল তেলের দাম

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন শিবির সমর্থিত জুমা

আসছে চরকির প্রথম ফ্ল্যাশ ফিকশন ‘খুব কাছেই কেউ’ 

জবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল গ্রেপ্তার 

কলাবাগানে পড়ে ছিল লুঙ্গি পেঁচানো যুবকের মরদেহ

এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে নিয়ে অশ্বিনের বিস্ফোরক মন্তব্য

কেউ আত্মহত্যার কথা ভাবছে কি না বুঝবেন যেভাবে

সংসার ভাঙছে মোনালির, গুঞ্জন নাকি সত্যি?

১০

১৭ বছরে ১৪ বার সরকার পতন হয়েছে নেপালে

১১

দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ১

১২

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বড় নিয়োগ, পদ ১৪৩

১৩

কাতারে ইসরায়েলি হামলা কি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য কোনো সতর্কবার্তা?

১৪

২০২৫ সালের সেরা বিনামূল্যে গান ডাউনলোডার অ্যাপস

১৫

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে ইনার হুইল ক্লাব জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

১৬

ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্রদলের পক্ষে পোস্ট দেওয়া সেই ওসি প্রত্যাহার

১৭

ডাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএসের কার বাড়ি কোথায়

১৮

কওমি মাদ্রাসা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা শিহাব

১৯

সিলেটে পাহাড় ও টিলা কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করল প্রশাসন

২০
X