

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সীমান্ত সংঘাতের পর দুই দেশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে আন্তঃসীমান্ত নদী কুনারের ওপর বাঁধ নির্মাণে আফগানিস্তানের তড়িঘড়ি নতুন করে আগুনে ঘি ঢেলেছে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি এলো।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সামনে বিকল্প আছে; যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে উন্মুক্ত যুদ্ধ হবে। তবে আমি দেখেছি, তারা শান্তি চায়। চুক্তি হওয়ার পর গত চার থেকে পাঁচ দিনে নতুন করে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি এবং উভয়পক্ষই যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে।’ এটি ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন আসিফ।
তিনি আরও বলেছেন, ‘কিন্তু ইস্তাম্বুলে চলমান আলোচনার মাধ্যমে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে তা উভয় দেশকে ‘উন্মুক্ত যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবে।’ আর তেমনটি হলে পাকিস্তান কোনো ছাড় দেবে না বলে দেশটির নেতারা ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন।
শনিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে খাজা আসিফের মন্তব্য প্রচার করা হয়। সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের মাঝে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়েছে। প্রতিনিধিদের মধ্যে রোববারও আলোচনা চলবে। নতুন করে সীমান্ত সংঘাত এড়াতে দুই দেশ চলমান সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে আগ্রহী।
এদিকে তালেবান নেতা আফগানিস্তানের জ্বালানি ও পানি মন্ত্রণালয়কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কুনার নদীর উপর একটি বাঁধ নির্মাণ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে ভাগাভাগি করা পানিসম্পদ নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তালেবানের জ্বালানি ও পানিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ মনসুর জানান, তার নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা মন্ত্রণালয়কে বিদেশি কোম্পানির জন্য অপেক্ষা না করে বরং দেশীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রকল্পটি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। মনসুর আখুন্দজাদাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, আফগানদের নিজস্ব পানি ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে।
ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের বৈঠকে নদীর পানি বন্টন ইস্যুতেও আলোচনা হতে পারে। কারণ, পাকিস্তানের শুষ্ক অঞ্চলে পানির অন্যতম উৎস কুনার নদী। এ নদীর পানি প্রবাহে সামান্য বাধাও পাকিস্তানিদের ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
মন্তব্য করুন