

গাজীপুরের টঙ্গী টিএন্ডটি কলোনি বিটিসিএল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মুহিবুল্লাহ মাদানীকে অপহরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সন্দেহাতীতভাবে দায়ী করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আগেই কোনো পক্ষকে দায়ী না করে ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা হয়েছে। একজন বর্ষীয়ান আলেমের অপহরণকে পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে মামলার আগে অনুসন্ধান শুরু করে। মামলার তদন্তকালে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সন্দেহাতীতভাবে দায়ী করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আরও বলা হয়েছে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এ তদন্তে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কোনো পক্ষকে দায়ী না করে ধৈর্যশীল হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছে।
মামলায় ভুক্তভোগী মুফতি মুহিবুল্লাহ মাদানী অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে মরকুন টিএন্ডটি বাজার এলাকার বিটিসিএল জামে মসজিদে খতিব ও পেশ ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয় ও সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে একাধিক পক্ষ অসন্তুষ্ট ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২২ অক্টোবর (বুধবার) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তিনি প্রাতঃভ্রমণে বের হলে শিলমুন এলাকার এস্কেস লিংক সিএনজি ফিলিং অ্যান্ড কনভার্সন সেন্টারের সামনে পৌঁছালে একটি সাদা অ্যাম্বুলেন্স তার গতিরোধ করে। মুহূর্তের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় ৪/৫ জন ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নেয়। পরে চোখ বেঁধে বেধড়ক মারধর করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একদিন একরাত ধরে নির্যাতনের পর অপহরণকারীরা তার দাড়ি কেটে ফেলে এবং কাঁচের বোতল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এরপর পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার হেলিপ্যাড বাজার এলাকার পাশে একটি গাছের সঙ্গে তাকে শিকলবন্দি অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় অপহরণকারীরা।
পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুফতি মাদানীকে উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ ও তার পরিবারের সদস্যরা সমন্বয়ের মাধ্যমে তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনেন।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় শুক্রবার রাতে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিক কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, খুব দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
জিএমপি দক্ষিণের উপকমিশনার মহিউদ্দীন কালবেলাকে বলেন, বিবৃতিতে যা বলা হয়েছে, সেটা খুব পরিষ্কার। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।
মন্তব্য করুন