আগে কখনও যা ঘটেনি, তাই করে দেখাল রাশিয়া ও চীন। এই প্রথম এক জোট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে হানা দিয়েছে রাশিয়া ও চীনের যুদ্ধবিমান। এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। সিএনএন জানিয়েছে, রাশিয়ার দুটি ও চীনের দুটি যুদ্ধবিমান একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ করে।
নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড-নোরাডের উদ্বৃতি দিয়ে সিএনএন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় ঢোকার পর বিমানগুলোকে তাড়া করে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-16, এফ-35 এবং কানাডার CF-18 যুদ্ধবিমান। পরে রাশিয়া-চীনের বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ ছেড়ে চলে যায়।
পরে এক বিবৃতিতে নোরাড জানায়, বিমানগুলো আলাস্কার আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ জোনে আন্তর্জাতিক আকাশসীমাতেই ছিল। তবে বিমানগুলোকে ‘হুমকি’ হিসেবে মনে করছিল না নোরাড। পরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার জোট নোরাড রাশিয়ার TU-95 Bear ও চীনের H-6 বোমারু বিমানকে তাড়িয়ে দেয়। নোরাড জানিয়েছে, বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার সার্বভৌম আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারই প্রথম H-6 বোমারু বিমান আলাস্কার আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ জোনে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এফ-16 ও এফ-35 যুদ্ধবিমান এবং কানাডার CF-18 যুদ্ধবিমানের তাড়া খেয়ে আলাস্কার আকাশসীমা ছেড়ে যায় রাশিয়া ও চীনের যুদ্ধবিমান।
বৃহস্পতিবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, চীন ও রাশিয়ার বিমানবাহিনী বেরিং সাগরের প্রাসঙ্গিক আকাশসীমায় একটি যৌথ কৌশলগত টহল চালিয়েছে। দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বার্ষিক সহযোগিতা পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এমনটা করা হয়েছে বলে জানায় বেইজিং।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৯ সাল থেকেই এমন টহল চালিয়ে আসছে দুই দেশ। পরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাসহ রাশিয়া থেকে আলাস্কাকে পৃথককারী সরু বেরিং প্রণালিতে এই যৌথ এয়ার পেট্রোল চালানো হয়। এই টহলে রাশিয়ার Su-30SM and Su-35S যুদ্ধবিমান অংশ নেয়।
বিমানগুলো পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে টহল চালিয়েছে বলেও জানায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই টহলের ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে রাশিয়া।
ভিডিওতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার যুদ্ধবিমান রাশিয়া ও চীনের যুদ্ধবিমানের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে, তাদের এই মহড়া ২০২৪ সামরিক সহযোগিতা পরিকল্পনার অংশ এবং এটি তৃতীয় কোনো দেশের বিরুদ্ধে ছিল না।
এদিকে রাশিয়া ও চীনের এমন মহড়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা ঝালিয়ে দেখার বিষয় আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, তারা সব সময় আমাদের পরীক্ষা করে দেখছে।