সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল সারার মধ্যে একটি ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই বৈঠকে ট্রাম্প সিরিয়াকে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা ২০২০ সালে চারটি আরব দেশ দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
বুধবার (১৪ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি দীর্ঘ ৩৩ মিনিট স্থায়ী ছিল। এর আগে, সিরিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ট্রাম্প, যা বৈঠকটির সঙ্গেই সম্পর্কিত ছিল।
এই বৈঠকটি ২৫ বছর পর প্রথমবারের মতো সিরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের সরাসরি আলোচনা ছিল এবং এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ট্রাম্পের এই উদ্যোগ, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রাম্প বৈঠকের সময় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট সারাকে বলেন, সিরিয়া যেন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএলকে ফিরে আসতে না দেয় এবং এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, সারা জানান যে, সিরিয়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একই নীতি অনুসরণ করে।
এই বৈঠকের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সিরিয়া থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বের করে দেওয়া এবং সব বিদেশি সন্ত্রাসীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ট্রাম্পের আহ্বান। সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই প্রস্তাবটি বেশ স্পর্শকাতর হতে পারে, তবে ট্রাম্পের দাবি, এটি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এদিকে, সৌদি আরবে সফর শেষে ট্রাম্প দেশটি ছেড়েছেন। এ সফরে সৌদির সঙ্গে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি, আরব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা এবং বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে তিনি জড়িত ছিলেন।
সৌদি আরব ছাড়ার আগে ট্রাম্পকে বিদায় জানাতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিমানবন্দরের টারম্যাকে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে তাদের মধ্যে হাস্যোজ্জ্বল পরিবেশে আলাপ-আলোচনা হয়।
এ সফরের পর ট্রাম্প তার পরবর্তী গন্তব্য কাতারে পৌঁছাবেন, যেখানে আরও কূটনৈতিক আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠক ও ট্রাম্পের সিরিয়াকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
মন্তব্য করুন