তখনো বাংলাদেশ দলকে বহনকারী বাসটি ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছায়নি। তবে আলাদা গাড়িতে দলের আগেই মাঠে উপস্থিত জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ওয়ানডে সিরিজে ছন্দহীন লিটন দাসকে স্কোয়াডে রাখা, একাদশে সুযোগ পাওয়া এবং শেষ পর্যন্ত বাদ পড়া—সবকিছুর উত্তরের একটাই ব্যাখ্যা, ‘আশায় গুড়ে বালি’। সুযোগ পেয়েও কাজে না লাগাতে পারার ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন লিটনও। তাইতো ক্যান্ডিতে আসার পর থেকেই তার ধ্যানজ্ঞানে ঢুকে পড়ে টি-টোয়েন্টি। অনুশীলনেও বাড়তি মনোযোগী ছিলেন সংক্ষিপ্ত সংস্করণ সামনে রেখেই। কেননা, এই সংস্করণে আবার অধিনায়কও তিনি। কিন্তু সাদা বলের সংস্করণে ব্যর্থ হওয়ার কারণ কি! একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়েও কেন উত্তরণের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না, সেসব প্রশ্নে লিটনের সহজ উত্তর, ‘আমি চেষ্টা করতে পারব’!
টেস্ট দলের সেরা পছন্দ লিটন। ওয়ানডেতে সুযোগ পাওয়ার পর ব্যর্থ হয়ে বাদ পড়েন। টি-টোয়েন্টিতে তার নেতৃত্বে খেলবে দল। সাদা বলের এক সংস্করণে বাদ পড়া অন্য সংস্করণে প্রভাব রাখবে না তো! লিটন বললেন এগুলোতে নাকি তিনি অভিজ্ঞ, ‘আমার মনে হয় না। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আপনাকে সব জায়গায় মানিয়ে নিতে হবে। আমার মনে হয়, এটা আমি খুব ভালো পারি। যখন টেস্ট খেলেছি, টেস্টের মতো খেলার চেষ্টা করেছি; ওয়ানডেতে তারা আমাকে সুযোগ দিয়েছিল। আমি আমার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারিনি। আশা করি সামনে ঘরোয়া টুর্নামেন্টে খেলব, আবার পারফর্ম করব, তারপর তারা আমাকে মনে করবে, আমি সেরা একাদশে থাকার মতো—অবশ্যই আমাকে সুযোগ দেবে।’ খারাপ পারফরম্যান্সের সঙ্গে ছন্দকে মেলাতে চান না লিটন। বাদ পড়াতে টি-টোয়েন্টি সিরিজেই মনোযোগ দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন এখানে ছন্দ জিনিসটা তেমন নয়। ওয়ানডেতে আমি ভালো খেলতে পারিনি, যে কারণে বেঞ্চে বসে ছিলাম। ওই কারণে, এ সময়টাতে আমি যতটুকু টি-টোয়েন্টি অনুশীলন করা যায়; সেটা করেছি। চেষ্টা করব, মাঠে ওটা কাজে লাগানোর জন্য।’
একটা সময় লিটনকে বলা হতো বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের নেতা। ব্যাটে তার পারফরম্যান্সও সেসবের ইঙ্গিত রেখেছিল। দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ যেন ছন্দপতন হলো অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের। ম্যাচের পর ম্যাচ পারফরম্যান্সে ঘাটতির দেখা মিলছে। দল থেকে বাদ পড়েছেনও বেশ কয়েকবার। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে সেটা পুষিয়ে দিতে পারবেন তো! লিটন বললেন, ‘আমার জন্য প্রতিটি সিরিজ, প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমি তো মনে করি, যে কোনো জায়গায় খেললে আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি চেষ্টা করতে পারব, আমি এটা আগেও অনেকবার বলেছি। আমি আমার চেষ্টা অনুশীলনেও করি, মাঠেও করি। অনেক সময় ব্যর্থতা চলে আসে, সফলতা খুব একটা আসে না; কিন্তু এটাই জীবনের অংশ।’ চেষ্টার কমতি না রাখলেও মাঠে তার ছাপ রাখতে পারছেন না লিটন। অন্তত সাদা বলে তার ব্যাট সে কথা বলেও না। কেন এমন হচ্ছে, সে উত্তর খুঁজছেন লিটনও, ‘অনেক খেলোয়াড়ই আছেন, যারা একটা বছর সফল হয়েছে, পরের বছর ব্যর্থ হয়েছে। কী কারণে হচ্ছে, তা জানাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং আমি ওইটাই খোঁজার চেষ্টা করছি। কীভাবে ওখান থেকে বের হয়ে আসতে পারি।’ লিটন উত্তর খুঁজে পেলেই তাকে ঘিরেও এমন নেতিবাচক প্রশ্নও ইতিবাচকতায় মিশে যাবে।
মন্তব্য করুন