

সাগরিকার উইকেট কেমন হবে—তা এখনই অনুমেয় নয়। কিন্তু মিরপুরের কালো মাটির উইকেটের চেয়ে যে ভিন্ন কিছু হবে; তা নিশ্চিত বলা যায়। অতীত পরিসংখ্যান বলছে, রানপ্রসবা উইকেটই হওয়ার কথা বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সংস্করণ বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলাচ্ছে উইকেটের ধরনও। যদিও ওয়ানডে সিরিজ শেষে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছিলেন, ঘরের মাঠে স্পিনিং উইকেটের সুবিধা নেওয়ায় সমস্যা দেখেন না তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই সংস্করণের অধিনায়ক লিটনের চাওয়া স্পোর্টিং উইকেট। দুই সংস্করণের দুই অধিনায়কের চাওয়া যে ভিন্ন, সেটা তো এখন স্পষ্টই।
২০২৭ সালে হতে যাচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসবান্ধব উইকেটে হবে আসন্ন ওই টুর্নামেন্ট। সেখানে সরাসরি খেলার যোগ্যতা নিশ্চিত করতে ঘরের মাঠের সিরিজগুলোতে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার পরিকল্পনায় মিরাজরা। সেজন্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্পিনিং উইকেট বানিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও জেতেন মিরাজরা। তবে টি-টোয়েন্টি দলের পরিকল্পনাটা আবার উল্টো। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পূর্বে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, টুর্নামেন্টের আগে মাত্র দুটি সিরিজ বাকি বাংলাদেশের। সেজন্যই ঘরের মাঠেও স্পোর্টিং উইকেট চান অধিনায়ক লিটন। উইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে গতকাল সাগরিকায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা চেষ্টা করতেছি ভালো উইকেটে খেলার। আপনি যখনই ভালো উইকেটে খেলবেন, ব্যাটাদের সফল হওয়ার সুযোগ বেশি থাকবে। আর যতগুলা খেলোয়াড়ই আছে, আমার মনে হয় ছয় থেকে সাত পর্যন্ত—বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই অনেক বড় বড় ছক্কা মারতে পারে। বাংলাদেশ দলের জন্য এটা একটা ইতিবাচক সংকেত। কিন্তু একই সময় আপনি শুধু ছয়ের ওপর দিয়ে গেলে হবে না, আপনাকে স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে হবে। যদি প্রয়োজন পড়ে ছয় মারার, মারবে। অন্যথায় সিঙ্গেল-ডাবলসে যেতে পারি।’
ওয়ানডে সিরিজে মিরপুরের উইকেট নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। উইকেট দেখে কেউ কেউ রসিকতা করতেও ছাড় দেননি। কিন্তু চট্টগ্রামে সেটা হচ্ছে না। তিন দিন ধরে অনুশীলন করা বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন বলছেন ভালো উইকেটের কথাই, ‘চট্টগ্রামে আমরা আশা করতে পারি যে, ভালো উইকেট এবারও হবে। কিন্তু উইকেটটা কী আচরণ করবে, তার ওপর তো আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ভালো উইকেটে হলে আমরা চেষ্টা করব রান করার। আর যদি উইকেট কঠিন হয়, তাহলে আমরা লড়াই করার চেষ্টা করব।’ উইন্ডিজের পর আয়ারল্যান্ড। দুই সিরিজেই অধিনায়কের চাওয়া খেলোয়াড়দের বড় চ্যালেঞ্জে পড়া, ‘সত্যি কথা বলতে আমি দুটি সিরিজেই চাই যেন আমাদের খেলোয়াড়রা খুব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। হোক সেটা ব্যাটিংয়ে, আবার হতে পারে বোলিংয়ে। আমি চাই যে বোলাররাও যখন বল করবে, তারা যেন চাপের মধ্যে থাকে। সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, সেখানে অনেকটা সাহায্য করবে।’ সম্প্রতি দারুণ ছন্দে লিটনের নেতৃত্বাধীন দলটি। টানা চারটি সিরিজ জিতেছে তারা। দেশে কিংবা বিদেশে—দাপুটে পারফরম্যান্সে শক্তির জানান দিচ্ছেন তারা। বিশ্বকাপের আগে দলটাও মোটামুটি গুছিয়ে নিয়েছেন লিটন। কখনো দলের সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ কিংবা মুস্তাফিজুর রহমানকেও বিশ্রামে রাখতে ভাবতে হচ্ছে তাকে। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে দলের খুঁটিনাটি সবকিছু ঠিক করে নিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
মন্তব্য করুন