ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন। দুই দেশের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে এ বিষয়ক আলোচনাও শুরু করেছেন। নয়াদিল্লির রাশিয়ান তেল ক্রয়ের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক দ্বিগুণ করার কয়েক দিন পরেই তার এই বক্তব্য এসেছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
তিনি বলেছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দেশ, যারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ামকশক্তি স্থিতিশীলতার এজেন্ডাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। যাই হোক, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি করতে চাই। এ ইস্যুতে ইতোমধ্যে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত আগস্ট মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারতের। এই টানাপোড়েনের প্রধান কারণ ভারতের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতি উচ্চমাত্রার রপ্তানি শুল্ক আরোপ।
২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ের পর চলতি বছর ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প। সে সময় মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ধার্যকৃত রপ্তানি শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। গত এপ্রিলে এই শুল্ক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেন ট্রাম্প।
পরে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনার দায়ে চলতি আগস্টের প্রথম দিকে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর ফলে ভারতের ওপর ধার্যকৃত শুল্কের পরিমাণ পৌঁছায় ৫০ শতাংশে।
গত ২৭ আগস্ট থেকে বর্ধিত এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে। উচ্চমাত্রার এই শুল্কের আঘাত ইতোমধ্যে অনুভূত হচ্ছে ভারতের অর্থনীতিতে।
ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়েছে, তার ইঙ্গিত গতকাল সোমবার ট্রাম্পও দিয়েছিলেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন মেটাতে সম্প্রতি সব ধরনের মার্কিন পণ্যের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত; কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো তাতে সাড়া দেননি।
‘তারা (ভারত) সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ধার্যকৃত শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু এখন দেরি হয়ে গেছে। এই প্রস্তাব আরও অনেক বছর আগে দেওয়া উচিত ছিল’, ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে বলেছেন ট্রাম্প।
মন্তব্য করুন