কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ১১:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘চট্টগ্রাম বন্দর একদিন পৃথিবীর অন্য দেশের কার্যক্রম পরিচালনা করবে’

‘চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণসংক্রান্ত চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্মারকপত্র (এমওইউ) স্বাক্ষর’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি : কালবেলা
‘চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণসংক্রান্ত চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্মারকপত্র (এমওইউ) স্বাক্ষর’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি : কালবেলা

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বন্দর পরিচালনাকারিরা বিনিয়োগ করছে। আমি সম্ভাবনা ও স্বপ্ন দেখি, সময় আসবে চট্টগ্রাম বন্দর পৃথিবীর অন্য কোন দেশের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণসংক্রান্ত চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা স্মারকপত্র (এমওইউ) স্বাক্ষর’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছরে ৫০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৬ সালে টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরুর কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আব্দুল্লা কাসিফ আল মৌদি, আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমেদ আল মুতায়া।

সমঝোতা স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই।

স্মারকপত্র অনুযায়ী আরব আমিরাতের আবুধাবী পোর্টস গ্রুপ বে-টার্মিনাল প্রকল্পসহ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও সংগ্রহ করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। মংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সক্ষমতা অর্জন করবে। পায়রা বন্দরে নির্মাণাধীন জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়েছে। এটা একটা নতুন অনুভূতি। আগে মাদার ভেসেলে পণ্য পরিবহনের জন্য আমাদের কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হতো। বর্তমানে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। এতে করে নির্ভরশীলতা কমে যাবে। মাতারবাড়ি বন্দর আঞ্চলিক ‘হাব’-এ পরিণত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য সৌদিআরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বে টার্মিনাল নির্মিত হলে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ আসা যাওয়া করবে। জোয়ার ভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। বে টারমিনালের সঙ্গে রোড, রেলওয়ে কানেক্টিভিটি থাকবে। পণ্য পরিবহন সহজলভ্য হবে।

তিনি বলেন, বেটার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাই।

প্রকল্পের নথি বলছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরের তীরে ‘বে- টার্মিনাল’ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরপর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ২০১৭ সালে পরামর্শক নিয়োগ শেষে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়। গতবছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চূড়ান্ত মাস্টার প্ল্যান এর মোড়ক উন্মোচিত হয়। সমীক্ষা অনুযায়ী মাস্টার প্ল্যানের ১ হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং দেড় হাজার মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ মোট তিনটি টার্মিনাল রয়েছে।

তিনটি টার্মিনালের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। মাস্টার প্ল্যানে মোট ১১টি জেটি রাখার প্রস্তাব করা হয়। চ্যানেলে যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১২ মিটার ড্রাফটের এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়ানো সম্ভব হবে। আবহাওয়া এবং সাগরের বড় বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার বা ঢেউনিরোধক বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বে- টার্মিনাল থেকে বহিঃনোঙরের দূরত্ব এক কিলোমিটার। মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর এবং আবুধাবী পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। এক হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কন্টেইনার টার্মিনাল পিএসএ, সিঙ্গাপুর এবং অপরটি ডিপি ওয়ার্ল্ড, দুবাই অর্থায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করবে বিশ্বব্যাংক। বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ইতোমধ্যে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫০০.৬৯ একর সরকারি খাস জমি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। ব্রেক ওয়াটার নির্মাণের জন্য বিশ্ব ব্যাংক এর বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সমঝোতার নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না : বুলবুল

লন্ডন বৈঠকের বিষয়বস্তু ও সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করতে হবে : চরমোনাই পীর

ইরান ও ইসরায়েলের শান্তিচুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের বার্তা

৫০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা

সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যাবে জামায়াত

জুনের দুসপ্তাহে প্রবাসী আয় ১৪ হাজার কোটি টাকা

সংস্কার ছাড়া আগামী নির্বাচন সম্ভব নয় : মুফতি আমির হামজা

ইসরায়েলে ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

আ.লীগের পতন না হলে হজ করতে পারতাম না : জামায়াত নেতা

‘বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে’

১০

রাজনীতিতে মন্টুর মতো মানুষদের বেশি প্রয়োজন ছিল : মির্জা ফখরুল

১১

দুদিনে ইসরায়েলের কতটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে জানাল ইরান

১২

রাজশাহীতে এমপি প্রার্থী নজরুল মণ্ডলসহ বিএনপির তিন নেতাকে শোকজ

১৩

রাতের মধ্যে বজ্রবৃষ্টি হতে পারে যেসব জায়গায়

১৪

ডাবলিন কনফারেন্স বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ বেগবান করবে

১৫

বিশেষ বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ করার দাবি

১৬

এক মেহেদীর কাছে ৩১টি স্মার্টফোন, অতঃপর...

১৭

পাইচো চোরের কিচ্ছা, তুমুল হাসির নাটক আবারও মঞ্চে

১৮

খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি

১৯

এবার দিনের আলোয় ইরানের হামলা শুরু

২০
X