চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরের একটি খালে পড়ে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট নিখোঁজ হয়েছিলেন দুই সন্তানের জনক ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। ওই সময় টানা কয়েকদিন অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে তৎপরতা বন্ধ করে দেয়।
এরপর কেটে গেছে দুই বছর। নিখোঁজ বাবার খোঁজে চেষ্টার কমতি ছিল না সন্তানদের। কিন্তু বাবাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তাই বাবার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে মুরাদপুরের সেই খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করেন সালেহ আহমেদের ছেলে সাদেকুল্লাহ মহিম।
এ সময় মহিম বলেন, ‘আপনারা জানেন, দুই বছর আগে এখানে আমার বাবা নিখোঁজ হয়েছেন। খুব চেষ্টা করেও বাবার খোঁজ পাইনি। আমার তো খুব ইচ্ছা করে অন্তত বাবার কবরটা জেয়ারত করি। আমি কোথায় যাব? কোথায় গেলে দুই মিনিটের জন্য বাবার কবরটা জেয়ারত করতে পারব।’
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায় ছেলের কান্নায় হৃদয় বিদারক এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সালেহ আহমেদ সবজির ব্যবসা করতেন।
নিখোঁজ সালেহ আহমেদকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতার পর খোঁজ চালায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ময়লা ভরাট খালে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে কষ্টে কাটছে মহিমদের দিন। কিন্তু কেউ খোঁজ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মহিম। এমনকি উচ্চ আদালত সালেহ আহমেদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের জন্য যে রুল করেছিল সেটারও জবাব দিচ্ছে না বলে চট্টগাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) দায়ী করেন মহিম।
এ বিষয়ে মহিম সাংবাদিকদের কাছে চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে তিনি নিজের পরিচয় লিখেন, ‘ইতি, সাদেকুল্লাহ মহিম চসিক ও সিডিএ-এর দায়িত্বহীনতার বলি সালেহ আহমেদের ছেলে।’
সেই চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার এক বছর পর আমরা উচ্চ আদালতে ক্ষতিপূরণের জন্য রিট করি। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ তদন্ত করে চসিক ও সিডিএকে দায়ী করে প্রতিবেদন দেয়। সেটা আদলতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহের রুল জারি করেছিল। তারা কোনো জবাব দেয়নি।’
চসিকের আইন কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন কালবেলাকে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি মামলার বিষয়ে আমি অবগত আছি। কিন্তু এটার অগ্রগতি কিংবা কী পর্যায়ে আছে সেটা কাগজপত্র দেখে জানাতে হবে।’
মন্তব্য করুন