তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বরাদ্দকৃত জায়গা পেতে আদালতে ঘুরছে শিশুশিল্পী

শিশুশিল্পী ফারজিনা আক্তার। ছবি : কালবেলা
শিশুশিল্পী ফারজিনা আক্তার। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের দুর্গম এলাকা ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফারজিনা আক্তার (৯)। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমায় অভিনয় করে শিশুশিল্পী শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত হয় ফারজিনা।

গত বছরের ১৪ নভেম্বর ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ফারজিনা পুরস্কার গ্রহণ করে। ফারজিনার বাবা সায়েম মিয়া দরিদ্র মানুষ। তাদের থাকার একমাত্র বাড়িটি অভাবের কারণে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। পুরস্কার রাখার জায়গাও নেই তার। পুরস্কারের টাকা দিয়ে গ্রামে একটি বাড়ি করার স্বপ্ন ফারজিনার। তার স্বপ্নের বিষয়টি পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনায় আসে।

পুরস্কার নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পর সুনামগঞ্জের তৎকালীন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সঙ্গে ফারজিনাসহ তার পরিবারের সবাই দেখা করেন। তিনি পরিবারের আর্থিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের একটি ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। সেইসঙ্গে সব সময় তার পরিবারের খোঁজখবর রাখার জন্য তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি।

সায়েম এরপর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘরের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ডিসেম্বর মাসে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে ফারজিনার পরিবারকে একটি ঘর দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া মৌজার লাকমা গ্রামে ফারজিনার পরিবারকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে ১৭ শতক জমি দেওয়া হয়। ওই জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ের অনুকূলে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দও হয়।

কিন্তু এই জমির অবৈধ দখলদার মোবারক মিয়া তাদের নামে আদালতে মামলা করে। এখন মামলার কাগজ নিয়ে সুনামগঞ্জ কোর্ট ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ঘুরছেন ফারজিনার বাবা সায়েম মিয়া। যাওয়া-আসা ও মামলার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সায়েম।

ফারজিনার মা আফিয়া বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আমার মেয়ের জন্য আমাদের জায়গাসহ ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। এখন ইউএনও স্যার আপাতত আমাদের গুচ্ছ গ্রামে (মুজিবপল্লী) থাকার জন্য একটি ঘর খুলে দিয়েছেন। পরিবার নিয়ে তিনবেলা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারি না। মামলা চালানো বা আসা-যাওয়ার খরচ বহন করার সামর্থ্যও আমার নেই। এদিকে স্থানীয়রা খুব সমস্যা করে। ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।

তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামস সাদাত মাহমুদ উল্লাহ কালবেলাকে জানান, ফারজিনার বাবা সায়েমকে ভূমিহীন হিসেবে সরকার কর্তৃক খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। সেখানে ঘর নির্মাণ হচ্ছে। মামলা শেষ হলে তারা সেই ঘরে উঠতে পারবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বপ্ন ছোঁয়ার আগেই থেমে গেল অরণ্যের জীবন

সন্তানকে বাঁচাতে মেট্রোরেলের গেট ধরে মায়ের আহাজারি

এবার নতুন কর্মসূচির ঘোষণা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

অভিনেত্রী মানেই পোশাক খুলে দাঁড়িয়ে পড়বে?

প্রীতির হ্যাটট্রিকে নেপালের বিপক্ষে আরেকটি জয় বাংলাদেশের

গ্রেপ্তার ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালকে নিয়ে রাশেদের পোস্ট

রাজশাহীতে বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত

কৃষি জমি রক্ষায় দ্রুত আইন আসছে : কৃষি উপদেষ্টা

টিসিবির চাল নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না বৃদ্ধের

সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসায় অনুদান মঞ্জুরির হার পুনর্নির্ধারণ

১০

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, ২৪৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

১১

কবরের আজাব ও বার্ধক্যের দৈন্য থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

১২

ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ হলে হাওরে কৃষি উৎপাদনের ক্ষতি কমানো সম্ভব : রিজওয়ানা হাসান

১৩

আমড়া ভর্তা খেয়ে হাসপাতালে ৬ শিক্ষার্থী

১৪

সিইসির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক বৃহস্পতিবার

১৫

‘কাজী জাফরকে বাদ দিয়ে কেউ বাংলার ইতিহাস লিখতে পারবে না’

১৬

গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে ‘জরুরি’ নির্দেশনা

১৭

পাঁচটি কংক্রিট মিক্সারসহ নিলামে ৫৮ লট পণ্য

১৮

নতুন আইফোন কবে আসছে, জানাল অ্যাপল

১৯

‎গকসু : শুরুতেই নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ

২০
X