বরিশাল (ভালা )প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমার পোলাডারে গুলি কইরা মাইরা হালাইলো, এইডার কি কোনো বিচার নাই?’

নিহত মো. হোসেন । ছবি : কালবেলা
নিহত মো. হোসেন । ছবি : কালবেলা

‘আমার পোলাডারে গুলি কইরা মাইরা হালাইলো। তারা নিরপরাধ মানুষরেও মারে, খারাপ মানুষরেও মারে, ভালা মানুষরেও মারে। কী কারণে মারে? এইডার কি কোনো বিচার নাই? আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন গুলিতে নিহত মো. হোসেনের মা রিনা বেগম। এ সময় মা, বোন ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।

গত ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকায় কোটাবিরোধী আন্দোলনের সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হন মো. হোসেন (২৫)।

নিহত হোসেনের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিব নগর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায়। তিনি ওই এলাকার ভূমিহীন দিনমজুর জাফরের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।

পেশায় একজন ট্রাকচালক। বড় ভাই হাসান গাজীপুরে লরিচালক আর ছোট ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী রাকিব। পিতার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে তেমন একটা পড়ালেখা হয়নি। অল্প বয়সেই উপার্জনের পথ বেছে নিতে হয়েছে। গাড়ির হেলপার থেকে হয়েছেন ড্রাইভার। তার মৃত্যুতে শোকে বাকরুদ্ধ পরিবার।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে নিহত হোসেনের বড় ভাই হাসান ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে কালবেলাকে বলেন, ১৮ জুলাই মোহাম্মদপুর বসিলা নেপকো হাউজিংয়ে ট্রাক রেখে ফোনে কথা বলতে বলতে চাঁদ উদ্যানের গেটের মধ্য দিয়ে লালতলা বাসায় যাওয়ার পথে হঠাৎ একটি গুলি তার ফোন ভেদ করে কানে লাগলে সে ডানদিকে ফিরে তাকাতেই আরেকটি গুলি এসে বুকে বিদ্ধ হয়। তাতে মুহূর্তের মধ্যে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

এ সময় ওই এলাকার পরিচিতরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হোসেনের লাশ নিয়ে ভোলায় আসি। ১৯ জুলাই রাত পৌনে ৯টায় চরফ্যাশন উপজেলার নিলকমল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড চর নুরুল আমিন গ্রামে নানা বাড়িতেই তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

নিহত হোসেনের চাচাতো বোন বিলকিস বেগম জানান, হোসেনের বাবা ২০১০ সালে মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন হাসান ও হোসেন। মা রিনা বেগম ইট ভাঙার কাজ করেন আর হোসেনের স্ত্রী গৃহকর্মীর কাজ করেন। তার দুটি সন্তান রয়েছে।

স্বামীর মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন! কে দেখবে তাদের—এমন ভাবনায় মূর্ছা যান স্ত্রী হাসনুর। এই অসহায় পরিবারটিকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারের সাহায্য কামনা করেন।

এ বিষয়ে দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকছুদুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমরা ঘটনা সম্পর্কে পরস্পর শুনেছি। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো খবরদারি করা হয়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার হাতে লাগানো নিমগাছটি এখন কেবলই স্মৃতি

বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ বহিষ্কার

শিশু সাজিদের মৃত্যু / রাজশাহীতে আরও ৩৯টি খোলা বোরহোল শনাক্ত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে খতমে নবুওয়তের শোক

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের শোক

থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজারে ৭ দফা বিধি-নিষেধ

গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধার মৃত্যু

খালেদা জিয়াকে নিয়ে ডাকসু নেতার বিতর্কিত পোস্ট, ক্ষোভের মুখে দুঃখ প্রকাশ

মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষের

খালেদা জিয়া একটি দলের নেতা নন, দেশের নেতা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১০

পে কমিশনের সভা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

১১

বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু

১২

কনকনে ঠান্ডায় শরীর গরম রাখতে খেতে পারেন এই ৩ খাবার

১৩

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের স্পিকার

১৪

চট্টগ্রামে পোস্টাল ভোটের নিবন্ধন ছাড়াল ৪৭ হাজার

১৫

খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি কামনায় বুধবার ঢাকেশ্বরীতে বিশেষ প্রার্থনা

১৬

সাইফুল আলম নীরবকে বহিষ্কার করল বিএনপি

১৭

আপসহীন নেত্রীর মৃত্যুতে রাজশাহীতে শোকের ছায়া

১৮

মনে হচ্ছে মাথার ওপর থেকে বটগাছ সরে গেল : জুয়েল চৌধুরী

১৯

বাণিজ্যমেলার তারিখ পরিবর্তন

২০
X