গাজীপুরের টঙ্গীতে কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ১৫ দাবিতে বিক্ষোভ করে মহাসড়ক অবরোধ করেছে যমুনা অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে এই বিক্ষোভ দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। এরপর শ্রমিকরা শাখা সড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়।
জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে এমট্রানেট গ্রুপের ভিলেইজ এক্সপোর্ট লি. ও ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী যমুনা অ্যাপারেলসের গেটে এসে কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য করে তারা নিজেদের কারখানার সামনে চলে যায়। পরে যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা বাইরে বেরিয়ে এসে ১৫ দাবি উত্থাপন করে ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল পৌনে ১১টার দিকে কারখানার সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় দিকে যানচলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের দাবিগুলির যৌক্তিক সমাধানের আশ্বাস দিলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে পুনরায় এমট্রানেট গ্রুপের শ্রমিকদের সাথে একত্রিত হয় তারা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, তারা ১৫ দফা দাবি মেনে নিতে যমুনা অ্যাপারেলস কারখানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন। কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বিক্ষোভ করছেন।
শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, হাজিরা বোনাস এক হাজার, নতুন হেলপারের বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা, এডমিন ম্যানেজার কবিরসহ কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগ, বৃষ্টির দিনে ১০ মিনিট ছাড় দেওয়া, শ্রমিক চলে গেলে কিছু না বলা, টিফিন বিল ৫০ টাকা, শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করা এবং আন্দোলনরত শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত না করাসহ ১৫ দফা।
আন্দোলনরত শ্রমিক আসরাফ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের কর্ম বিরতি আজ ৩য় দিন চলছে। আগে আমাদের বেতন দেওয়া হতো ৫ থেকে ৬ তারিখ। এখন ১০ ও ১৫ তারিখ চলে যায় তারপরও বেতন দেয় না। কারখানার কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করে। আমাদের ১৫ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগদান করবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো যখনই উপস্থাপন করা হয় তখন কারখানার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং চাকরিচ্যুত করে দেয়। কোনো ছুটি চাইলে ছুটি পাওয়া যায় না। অসুস্থ হয়ে পড়লে সঠিক চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায় না।
যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেডে শ্রমিক রিপা কালবেলাকে জানান, আমরাও আজকে আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। আমাদের ভাই বোনরা তিনদিন ধরে এই রোধে আন্দোলন করছেন। আমার তাদের সঙ্গে আন্দোলন করে দাবি আদায় করে ছাড়বে। কারখনার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের পাওয়া যায় নি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে কারখানার কতৃক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন