চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

৪০ দিন ধরে বিছানায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব

গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব হোসেন। ছবি : কালবেলা
গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব হোসেন। ছবি : কালবেলা

গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪০ দিন ধরে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন কুমিল্লার মো. ইয়াকুব হোসেন। টাকার অভাবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তার পরিবার।

ইয়াকুবের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের বরৈয়া গ্রামে। দুই রুমের একটি টিনশেডের বাড়ি। কৃষক বাবার সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে খুব অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন। রাজমিস্ত্রির সঙ্গে হেলপার হিসেবে সামান্য বেতনে কাজ করতেন ইয়াকুব।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ইয়াকুবের বাড়িতে গেলে তিনি জানান, ৫ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকার অন্যদের সঙ্গে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শহরে। ঐদিন বিকেলে আনন্দ মিছিলকারী ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে থানা পুলিশের হামলা-পাল্টাহামলা, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ইয়াকুব নিরাপদ দূরত্বেই ছিলেন। কিন্তু এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলি এসে লাগে ইয়াকুবের দুই পায়ে। বামপাশের হাঁটুর নিচে লাগা গুলিটি একপাশ দিয়ে ঢুকে অপর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে চৌদ্দগ্রাম সরকারি হাসপাতালে নেয় উপস্থিত লোকজন।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলেও অবস্থার তেমন একটা উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হয় তাকে।

প্রায় তিন সপ্তাহ পরে সংবাদ পেয়ে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কুমিল্লা সিএমএইচ হাসপাতালে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। এরপর বাসায় ফিরলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা এখনো চলমান। এক্ষেত্রে এলাকাবাসী বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে সহযোগিতা করলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে পরিবার।

এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বিছানায় পড়ে থাকায় মা-বাবার পক্ষে সংসার চালানো বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। অভাবের সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেখানে প্রতিদিন ইয়াকুবের চিকিৎসা খাতে খরচ হচ্ছে অনেক টাকা।

গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব হোসেন বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আজ বিছানায় কাতরাচ্ছি। প্রচণ্ড ব্যথায় ঘুমাতে পারি না। আমার কারণে পরিবারের সবার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ফলে আর্থিক সমস্যাসহ পরিবারকে পড়তে হয়েছে নানা সমস্যায়। চিকিৎসা ব্যয়ে আমার গ্রামের বিত্তবানরাসহ যুবসমাজ এগিয়ে এসেছে। আমি সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য, সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।

ইয়াকুবের মা বলেন, একটি মাত্র ছেলে আমার। সংসারে ভরণপোষণ কথা চিন্তা করে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। গুলির আঘাতে ছেলে গত এক মাস বিছানায় কাতরাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেই ৭ খুন মামলার আসামি নূর হোসেনের ভাই নূর ছালাম গ্রেপ্তার

দেশের আসার তারিখ জানালেন তারেক রহমান

ব্যালন ডি’অরের পর ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ও জিতলেন ডেম্বেলে

ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না : নাহিদ

বিজয় দিবসে ‘গুণীজন সম্মাননা’ পেলেন ইকবাল মান্দ বানু

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত ৩ অস্ত্র উদ্ধার, শুটার ফয়সালের বাবা গ্রেপ্তার

‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ ঘোষণা জুলাই ঐক্যের

হাদিকে গুলি / সেই মোটরসাইকেলের মালিকানা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন কবির

কারাগারে ফুটবল খেলা, বন্দিদের কাছে কর্তৃপক্ষের হার

জামায়াতের এক নেতা বহিষ্কার

১০

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

১১

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে ছাত্রলীগ কর্মী আটক

১২

ইডেনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও জার্নালের মোড়ক উন্মোচন

১৩

ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান বিজয় দিবস উদযাপন

১৪

তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগ পাবেন যে ১০ জন

১৫

‘স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আড়াল করা হয়েছিল’

১৬

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির বিশেষ নির্দেশনা

১৭

মনোনয়ন না পেয়ে এবি পার্টিতে যোগ দিলেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা

১৮

‘হাওয়া’র পর সুমনের ‘রইদ’

১৯

সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

২০
X