২৩ দিন পর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়েছে। তবে ভুটান থেকে এখনও পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে৷
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল থেকে ভারত থেকে পাথর আমদানি হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ৷
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বন্দরে ভারত থেকে দুটি পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশ করে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পাথর আসায় কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটিতে।
তিনি বলেন, ‘আজ ২৩ থেকে ৪০টি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করবে। আগামী শনিবার অথবা রোববার থেকে পুরোদমে ভারত থেকে পাথর আসবে আমাদের বন্দরে। তবে ভুটানের পাথর আসা বন্ধ রয়েছে।’
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পাথর আমদানি শুরু হয়েছে। চলতি আগস্ট মাসের ১ তারিখ থেকে শুল্ক কর বৃদ্ধি করার কারণে ব্যবসায়ীরা লোকসান হওয়ার ভয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করা বন্ধ রেখেছিলেন। শুল্ক বিভাগের সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। সে ভিত্তিতেই আমদানিককারকরা পাথর আমদানি করতে শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে কিছু ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে।’
এর আগে পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছিলেন, ৩১ জুলাই শুল্ক বিভাগ ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে প্রতি মেট্রিক টন ভারতীয় পাথরে (বোল্ডার) অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ১২ ডলার থেকে ১৩ ডলার করার কথা জানায়। আর ভুটানের পাথরে (ভাঙা পাথর) প্রতি মেট্রিক টনে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ২১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২৪ ডলার করা হয়েছে। এ রেটে পাথর আমদানি করলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ভেবে তারা পয়লা আগস্ট থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন।
এতে ভারত থেকে টানা ২৩ দিন এবং ভুটান থেকে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্দরটিতে পাথর আসা বন্ধ থাকে।
বন্দরটিতে আমদানি ৯৫ শতাংশ পাথর নির্ভর হওয়ায় ভারত ও ভুটান থেকে প্রতিদিন ৩৫০-৪৫০টি ট্রাকে পাথর আমদানি হতো। পাথর না আসায় কর্মচাঞ্চল্য হারিয়ে ফেলে বন্দরটি। অলস সময় পার করেন হাজার হাজার শ্রমিক।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ওই অর্থবছরে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
এ বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি ছাড়াও ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে মেশিনারিজ, প্লাস্টিক দানা, ভুট্টা, অয়েল কেক (খৈল), আদা, গম, চাল, ফল, উৎপাদিত ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হয়।
একইভাবে দেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্টস সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, পার্টস, কটনব্যাগ, ওষুধ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন দ্রব্য রপ্তানি চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন